উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন উদ্ধারকারী জাহাজ কিনবে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ
সাম্প্রতিককালে মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলে প্রায়ই কয়লাসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী কার্গো জাহাজডুবির ঘটনা ঘটছে। এতে একদিকে যেমন সুন্দরবনের ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাবও পড়ছে। বন্দর চ্যানেলের অভ্যন্তরে কোনো জাহাজ ডুবে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে তাতে কর্তৃপক্ষের তেমন কিছুই করার থাকে না।
অনেক সময় দেখা যায়, কোনো জাহাজ ডুবে গেলে সেটা উদ্ধার করার তৎপরতা দেখায় না মালিকপক্ষ বা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান। এতে বন্দর চ্যানেল হয়ে পড়ে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। তাই বন্দর চ্যানেল সার্বক্ষণিক নিরাপদ রাখতে হলে অবশ্যই উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন নিজস্ব জলযান প্রয়োজন। এক্ষেত্রে মোংলা বন্দর চ্যানেল ও বহির্নোঙ্গরে দুর্ঘটনাকবলিত জলযান দ্রুত উদ্ধার করার জন্য একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন উদ্ধারকারী জলযান সংগ্রহের কথা জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বন্দর কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক (প্রশাসন) ও হারবার মাস্টার কমান্ডার শেখ ফখর উদ্দিন বলেন, ‘বন্দরের ২৪টি ভবিষ্যৎ উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে ১৬ নম্বর প্রকল্পে এটি রয়েছে। এটি কীভাবে সংগ্রহ করা হবে, তা নিয়ে পরামর্শক নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এর পরই ক্রয় করা হবে শক্তিশালী এ জলযান।’
তবে মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী আলহাজ হোসাইন মোহাম্মদ দুলাল বলেন, ‘বন্দরের উদ্ধারকারী জাহাজ সংগ্রহের প্রকল্পের বিষয়টি ২০১৫ সাল থেকেই শোনা যাচ্ছে। যা এখনো আলোর মুখ দেখেনি। বিগত বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ সর্ব প্রথম উদ্ধারকারী নৌযান সংগ্রহের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছিলেন, কিন্তু ওই জলযানের রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় অনেক বেশি হওয়ায় প্রকল্পটি ওই সময়ে বাতিল হয়ে যায়।’
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘চলতি বছর থেকে আগামী ২০৪০ সাল পর্যন্ত ২৪টি উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এসব প্রকল্পের মধ্যে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন উদ্ধারকারী জাহাজ কেনার পরিকল্পনা রয়েছে এবং সেটি ২০২৫ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে সংগ্রহ করা সম্ভব হবে।’
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা বলেন, ‘২০০৯ সালে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১২ বছরে এই বন্দরের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। অনেক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে, যার সুফল পাচ্ছে মোংলা বন্দর তথা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ। ধারাবাহিক উন্নয়ন অব্যাহত থাকায় দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে এ বন্দর।’
মোহাম্মদ মুসা আরও বলেন, ‘বন্দর চ্যানেল নিরাপদ রাখা এবং নাব্যতা রক্ষা আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। বর্তমানে আমাদের ইনারবারে ড্রেজিং কার্যক্রম চলছে এবং উদ্ধারকারী জাহাজ যতো দ্রুত সম্ভব আমরা সংগ্রহ করব। মোংলা বন্দরে ব্যাপক উন্নয়নের কারণে এ অর্থবছরে প্রায় এক হাজার জাহাজ আগমনের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে।’
বন্দরের উন্নয়নে সব প্রকল্প ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।