টিপ নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যে ক্লোজড পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত
টিপ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আপত্তিকর মন্তব্য করায় সিলেট জেলা পুলিশের আদালত পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে ক্লোজড করা হয়েছে। স্ট্যাটাসের বিষয়টি তদন্তের জন্য তিন সদস্যের গঠন করা হয়েছে কমিটি। ওই কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দেওয়া হয়েছে নির্দেশ।
গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ আদেশ দেন পুলিশ সুপার (এসপি) সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন। সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) লুৎফুর রহমান তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
লুৎফুর রহমান বলেন, ‘এসপি ফরিদ উদ্দিন সোমবার একটি ঘটনার তদন্তে জৈন্তাপুর ছিলেন। রাতে তিনি স্ট্যাটাসের বিষয়টি জেনে লিয়াকতকে ক্লোজের নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তিন সদস্যের এ কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।’
টিপ পরায় এক নারীকে পুলিশ সদস্যের হেনস্তায় দেশজুড়ে আলোচনার সময়ে প্রতিবাদকারীদের নিয়ে ফেসবুকে ব্যঙ্গ করেছিলেন লিয়াকত আলী। তিনি সিলেট জেলা পুলিশের আদালত পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত।
গতকাল সোমবার ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে নারীর পোশাক নিয়েও মন্তব্য করেন লিয়াকত। তবে সন্ধ্যার দিকে নিজের স্ট্যাটাসটি মুছে (ডিলিট) দেন তিনি। দুপুরে নিজের ফেসবুক আইডি থেকে দেওয়া স্ট্যাটাসে লিয়াকত লেখেন—‘টিপ নিয়ে নারীকে হয়রানির করার প্রতিবাদে অনেক পুরুষ নিজেরাই কপালে টিপ লাগাইয়া প্রতিবাদ জানাচ্ছে। কিন্তু, আমি ভবিষ্যৎ ভাবনায় শঙ্কিত। বিভিন্ন শহরে অনেক নারীরা যেসব খোলামেলা পোশাক পরে চলাফেরা করেন, তার মধ্যে অনেকেরই ব্রায়ের ওপরে দিকে প্রায় অর্ধেক আন-কভার থাকে। পাতলা কাপড়ের কারণে বাকি অর্ধেকও দৃশ্যমান থাকে। এখন যদি কোনো পুরুষ এভাবে ব্রা পরার কারণে কোনো নারীকে হয়রানি করে, তবে কি তখনও আজকে কপালে টিপ লাগানো প্রতিবাদকারী পুরুষগণ একই ভাবে ব্রা পরে প্রতিবাদ করবেন?’
এমন স্ট্যাটাসের ব্যাপারে জানতে চাইলে সোমবার সন্ধ্যায় পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী বলেন, ‘ওই স্ট্যাটাস আমি ডিলিট করে দিয়েছি। যেটা ডিলিট করে দিয়েছি, যেটার অস্তিত্বই নেই, সেটা নিয়ে আমি কথা বলবো না।’
স্ট্যাটাস ডিলিট করার কারণ জানতে চাইলে লিয়াকত বলেন, ‘আমার ভালো লেগেছিল, তাই দিয়েছিলাম। পরে ভালো লাগেনি, তাই সরিয়ে দিয়েছি। তা ছাড়া ওটা আমার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, প্রাতিষ্ঠানিক কিছু না।’
প্রসঙ্গত, গত শনিবার কপালে টিপ পরে হেনস্তার শিকার হন তেজগাঁও কলেজের থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক ড. লতা সমাদ্দার। এ ঘটনায় অভিযুক্ত কনস্টেবল নাজমুল তারেককে চিহ্নিত করে সোমবার বরখাস্ত করেছে পুলিশ।