দাওয়াতের কথা বলে হত্যা, একজনের যাবজ্জীবন
কুড়িগ্রামে দাওয়াত খাওয়ানোর কথা বলে ডেকে নিয়ে হত্যার দায়ে দুলাল হোসেন (৩২) নামের এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার দুপুরে কুড়িগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ মো. আব্দুল মান্নান আসামির উপস্থিতিতে এ আদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত দুলাল হোসেন জেলার রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের কোমরভাঙ্গী (পাখিউড়া) গ্রামের ফরজ আলীর ছেলে। নিহত ছানোয়ার হোসেন লিচু (২৩) একই গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে। তিনি মোবাইল ফোন টেকনিশিয়ান।
মামলার বরাত দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) আব্রাহাম লিংকন জানান, নিহত ছানোয়ার রৌমারী উপজেলার সায়েদাবাদ বাজারে মোবাইল সার্ভিসিং ও কম্পিউটার কম্পোজের ব্যবসা করতেন। দণ্ডপ্রাপ্ত দুলাল হোসেনের ভাই সাইফুল ইসলামও ওই বাজারে একই ব্যবসা করতেন। ছানোয়ার নিহত হওয়ার তিনি থেকে চার মাস আগে সাইফুল ইসলামের ওপর রাতের অন্ধকারে হামলার ঘটনা ঘটে। তাঁর পরিবার এজন্য ছানোয়ারকে সন্দেহ করে। এরই জের ধরে ২০১০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে দাওয়াত খাওয়ানোর কথা বলে ছানোয়ারকে ডেকে নেন দুলাল। এরপর পার্শ্ববর্তী রাজীবপুর উপজেলার বদরপুর গ্রামের একটি মাঠে নিয়ে গিয়ে ছানোয়াকে ছুরিকাঘাত করে এবং তাঁর দুই হাতের কবজি ভেঙে দেন। পরে ছানোয়ারের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে গিয়ে তাঁকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে রাজীবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ছানোয়ারকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনার পরের দিন ২২ ফেব্রুয়ারি নিহত ছানোয়ারের বাবা দোলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে রাজীবপুর থানায় দুলাল হোসেন, তাঁর ভাই সাইফুল ও বাবা ফরজ আলীসহ অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। দীর্ঘ প্রায় ১১ বছর মামলার বিচারকাজ শেষে আজ মঙ্গলবার অভিযুক্ত দুলাল হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দেন। মামলার অপর আসামিদের অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাঁদের বেকসুর খালাস দেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আব্রাহাম লিংকন এবং আসামিপক্ষে এনামুল হক চৌধুরী।