মাছ ধরতে বাধা দেওয়ায় প্রহরীকে হত্যা, দুজন গ্রেপ্তার
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় করতোয়া নদীতে অভয়াশ্রমের মাছ ধরতে বাধা দেওয়ায় নিরাপত্তা প্রহরীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এর আগে গত ২৩ অক্টোবর নিরাপত্তা প্রহরী বিশু দাসকে (৩৫) পিটিয়ে আহত করে দুর্বৃত্তরা। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বুধবার তিনি মারা যান।
নিহত বিশু দাসের বাড়ি দেবীগঞ্জ উপজেলা সদরের মধ্যপাড়া এলাকায়।
আজ বৃহস্পতিবার বিশু দাসের বাবা হরি দাস বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো দুই থেকে তিনজনকে আসামি করে দেবীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলার আসামিরা হলেন দেবীগঞ্জ উপজেলা সদরের উত্তরপাড়া এলাকার রুবেল ইসলাম (২৩), এরশাদ হোসেন (২৭), রাজ্জাকুল ইসলাম (২৮), মধ্যপাড়া এলাকার সোহাগ ইসলাম (২৬), কাজল ইসলাম (২৪) ও তালতলা সরকারপাড়া এলাকার রুহুল আমিন (৩০)।
এদের মধ্যে রুহুল আমিন ও রাজ্জাকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মৎস্য অভয়াশ্রমের নিরাপত্তার জন্য দেবীগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পরিমল দে সরকার বিশু দাসকে নিয়োগ দেন। মাঝেমধ্যেই রুবেল, সোহাগ, এরশাদ, কাজল, রহুল আমিন ও রাজ্জাকুলসহ কয়েকজন অভয়াশ্রম থেকে চুরি করে মাছ ধরতেন। এতে বাধা দিতেন প্রহরী বিশু দাস। গত ২৩ অক্টোবর ভোরে আবার চুরি করে মাছ ধরতে আসে ওই দল। এতে বিশু দাস বাধা দিলে তারা বিশু দাসকে মারধর শুরু করে। এ সময় বিশু দাসের চিৎকারে পথচারীরা ছুটে আসলে তারা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজনকে বিশুকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বুধবার রাতে মারা যান বিশু।
এদিকে, বিশুর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ওই দিন রাতে স্থানীয় লোকজন দেবীগঞ্জ-পঞ্চগড় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
বুধবার রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে রুহুল আমিন ও রাজ্জাকুল ইসলাম নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে।
বিশু দাসের বাবা হরি দাস বলেন, ‘সরকারি সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে আমার ছেলের প্রাণ গেল। আমার ছেলেকে যারা বিনাদোষে পিটিয়ে হত্যা করেছে, আমি তাদের ফাঁসি চাই।’
এ ব্যাপারে দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, নিহত বিশু দাসের বাবা থানায় হত্যা মামলা করেছেন। এরই মধ্যেই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।