বঙ্গোপসাগরের বুকে ‘চর বিজয়’
পটুয়াখালীর কুয়াকাটার অদূরে গভীর সাগরের বুক চিড়ে প্রায় পাঁচ হাজার একর আয়তন নিয়ে জেগে উঠেছে নতুন এক চর। বিজয়ের মাসে সন্ধান পাওয়ায় পর্যটনপ্রেমীরা এটির নাম দিয়েছেন ‘চর বিজয়’। অতিথি পাখি আর লাল কাঁকড়ার অবাধ বিচরণে এ চর আরো বেশি আয়তন নিয়ে পরিণত হচ্ছে স্থায়ী ভূখণ্ডে। পরিকল্পিত বনায়ন এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের সমন্বিত কার্যক্রম নেওয়া হলে পর্যটনশিল্পে এই চর যোগ করতে পারে এক নতুন সম্ভাবনা।
কুয়াকাটা থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার বঙ্গোপসাগরের অভ্যন্তরে অথৈ জলরাশির মধ্যে আকাশ আর মাটির মিতালি তৈরি করেছে জেগে ওঠা এক নতুন চর। উঠতি সকাল আর পড়ন্ত বিকেলে সুয্যিমামার আলোর ছটায় দূর থেকে পুরো দ্বীপটি দেখতে বর্ণিল মনে হয়। স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীরা এর নাম দিয়েছেন ‘চর বিজয়’।
বর্ষা মৌসুমে পানিতে ডুবে থাকলেও শীত মৌসুমে পাঁচ হাজার একর আয়তন নিয়ে জেগে ওঠে এ চর। ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছের অভয়ারণ্য হওয়ায় সারা বছর এর আশপাশে থাকে জেলেদের উপস্থিতি। অস্থায়ী বাসস্থান তৈরি করে মাছ শিকার ও শুঁটকি তৈরি করেন তাঁরা। মানুষের বিচরণ কম থাকায় শীতে এখানে সমাগম ঘটে অতিথি পাখির। লাল কাঁকড়া আর অতিথি পাখির অবাধ বিচরণ এ চর ভ্রমণে এক নতুন মাত্রা যোগ করছে ভ্রমণপিপাসুদের কাছে।
এখানে আসা পর্যটকরা বলছেন, পরিবেশ ও প্রকৃতি ঠিক রেখে যেন এখানে উন্নয়ন করা হয়।
সম্প্রতি এই চরে ঘুরতে যান পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক। আনুষ্ঠানিক কোনো নাম না দিলেও দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং পর্যটকবান্ধব করার কথা বলছেন তিনি।
জেলা প্রশাসক ড. মো. মাছুমুর রহমান বলেন, ‘সামনের দিনগুলোতে এখানে বড় রকমের একটা পরিকল্পনা এখানে আসবে। যার মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ সব দিক দিয়ে ভালো একটি পরিকল্পনা এখানে নিতে পারব।’
কুয়াকাটা পর্যটন পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘এর সম্ভাবনাকে অঙ্গুরেই বিনষ্ট না করে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে, কীভাবে এর উন্নয়ন করা যায়। এখানে ট্যুরিস্ট স্পট কীভাবে হবে, সেটাও ভাবতে হবে। এখানে পর্যটকরা এলে থাকবে নাকি সন্ধ্যার আগেই চলে যাবে?’
সাগরের বুক চিড়ে জেগে ওঠা দ্বীপগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করলে দেশের পর্যটনশিল্পে ঘটবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এবং রাজস্ব খাতে যোগ হবে এক নতুন মাত্রা।