জেএমবির তিন ‘সদস্য’ গ্রেপ্তার, গোলাবারুদ ‘উদ্ধার’
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার জামিরা গ্রাম থেকে জঙ্গি সংগঠন জেএমবির তিন সদস্যকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। আজ রোববার ভোরে গ্রামটিতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে অস্ত্র ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করার দাবি করেছে র্যাব-৫।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের শরিফুল ইসলাম শরিফ (৪৫), একই উপজেলার চাকলা গ্রামের জাকারিয়া হোসেন ওরফে জাক্কার (৪৩) ও আতাউর রহমান ওরফে আহসান হাজি (৩৫)।
বেলা ১১টার দিকে র্যাব ৫-এর সদর দপ্তরে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়। পরে তাঁদের বিষয়ে বিস্তারিত জানান র্যাব ৫-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুবুল আলম। তিনি জানান, জেএমবি সদস্যরা নাশকতার পরিকল্পনা নিয়ে তা বাস্তবায়নের জন্য পুঠিয়ার জামিরা গ্রামে জমায়েত হয়েছে, এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের একটি দল আজ ভোরে সেখানে অভিযান চালায়। এ সময় ওই গ্রামের এক চিকিৎসকের ডাল মিলের টিন শেডের বারান্দা থেকে শরিফ, জাক্কার ও আহসান হাজিকে গ্রেপ্তার করা হয়। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে আর পাঁচ-ছয়জন পালিয়ে যায়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, আটটি গুলি, চারটি হাতবোমা, ৫০০ গ্রাম গান পাউডার, একটি আইইডি (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস), দুটি সাংগঠনিক বই ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম পাওয়া গেছে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুবুল আলম জানান, গ্রেপ্তার হওয়া শরিফ ২০০২ সালে রানার নামের এক জঙ্গির মাধ্যমে জেএমবিতে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি অর্থ, অস্ত্র ও গোলাবারুদ কেনা এবং নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের টার্গেট সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেন। যা তাদের আঞ্চলিক কমান্ডার জিয়ার কাছে হস্তান্তর করে। অপরদিকে, জাক্কার পেশায় একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। তিনি জেএমবি সদস্য রবিউল, জিয়া ও আউয়ালের মাধ্যমে দলে যোগ দেন। পরে তিনি জেএমবি সদস্য রবিউলের মাধ্যমে চাঁপাইনবাবগঞ্জের চাকলা স্কুল মাঠে শারীরিক ও পরে বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ নেন। বর্তমানে তিনি জেএমবি সদস্যদের বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ দিতেন। আর আহসান জঙ্গিদের অর্থ জোগান দেওয়া ছাড়াও জেএমবির বিভিন্ন বৈঠকে অংশ নিয়ে সরকারি বিভিন্ন স্থাপনায় নাশকতা, সাংগঠনিক বই বিতরণ ও সংঠনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে পরামর্শ দিতেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি তানোর থেকে গ্রেপ্তার সাহেবজান আলী জানান জিয়াউল ওরফে জিয়াউর ওরফে জাকিউল ওরফে জিয়া নামে এক জঙ্গির নেতৃত্বে রাজশাহী অঞ্চলে জেএমবির মাঠপর্যায়ে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চলছে। বিশেষ করে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলায় জিয়ার নেতৃত্বে কিছু সদস্য সংগঠনের কাজ করছেন। সাহেবজানের এমন তথ্যের ভিত্তিতে সম্ভাব্য স্থানগুলোতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।