কারাগারে মৃত্যু, ছাত্রদল নেতার জানাজা অনুষ্ঠিত
ছাত্রদলের ঢাকা মহানগর উত্তরের সহসভাপতি জাকির হোসেন মিলনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় মারা যান তিনি।
আজ মঙ্গলবার বাদ জোহর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র রক্ষার জন্য শহীদদের তালিকায় নতুন আরেকটা নাম যোগ হলো শহীদ জাকির হোসেন মিলন। তাঁর এই আত্মত্যাগের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র মুক্তি পাবে, মানুষ তাদের অধিকার ফিরে পাবে।
ফখরুল বলেন, ‘মিলনের শাহাদাত আমাদের ঐক্যবদ্ধ করেছে, আমাদের আন্দোলনে সাহস জুগিয়েছে। আমরা রাজপথে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব, জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনব।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য থেকে মিলনকে ধরে নিয়ে রিমান্ডের নামে হত্যা করা হয়েছে। হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন, কাউকে যেন সাদা পোশাকে গ্রেপ্তার করা না হয়। কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আশ্রয় নেব, তারাই আমাদের নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করছে। তাহলে আমরা কার কাছে যাব?’
মির্জা আব্বাস আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে আমাদের অবস্থা রোহিঙ্গাদের চেয়ে খারাপ হয়ে গেল? আমাদের নেতাকর্মীদের যেখানে পাচ্ছে, পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার-নির্যাতন করছে।’
জানাজায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, মোহাম্মদ শাহজাহান, আহমেদ আযম খান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা আতাউর রহমান ঢালী, জয়নুল আবদীন ফারুক, রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, হারুনুর রশিদ, নজরুল ইসলাম মঞ্জু, শামীমুর রহমান শামীম, আবদুল আউয়াল খান, তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ, রফিক সিকদার, আমিনুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, বিল্লাল হোসেন তারেক, ছাত্রদলের মামুনুর রশিদ মামুন, আসাদুজ্জামান আসাদ, ঢাকা উত্তর ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাখাওয়াত, আলমগীর হাসান সোহান, ইখতিয়ার রহমান কবির, জহিরুল ইসলাম বিপ্লব, সাজ্জাদ হোসেন রুবেল, মিনহাজুল ইসলাম ভুইয়া, রাজিব আহসান চৌধুরী পাপ্পু।
গত ৬ মার্চ জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে ফেরার পথে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের সহসভাপতি ও তেজজাঁও থানা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন মিলনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর তাঁকে তিন দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। রিমান্ড শেষে গত ১০ মার্চ তাঁকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সেদিন থেকে কারাগারেই বন্দি ছিলেন তিনি।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেছিলেন, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের পর সুস্থ অবস্থায় মিলনকে আদালতে পাঠানো হয়। তাঁর ওপর কোনো নির্যাতন চালানো হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।