যেভাবে পেটে ভরে ইয়াবা আনা হচ্ছে
ছোট ছোট ইয়াবা স্কচটেপ দিয়ে পেঁচিয়ে বানানো হয় ক্যাপসুল। এরপর তা পাকা কলার সাহায্যে পেটে ঢোকানো হয়। নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছানোর পর পেটে চাপ প্রয়োগ করে বা প্রাকৃতিক কাজের মাধ্যমে বের করে আনা হয়। এভাবে মিয়ানমার সীমান্তসংলগ্ন কক্সবাজার থেকে বাহকের মাধ্যমে ঢাকায় চলে আসছে মরণনেশা ইয়াবা।
পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, একজন বাহক সর্বোচ্চ তিন হাজার ইয়াবা পেটে বহন করতে পারেন। টাকার বিনিময়ে এই কাজ করছেন দরিদ্র নারী-পুরুষরা। এরপর তাঁদের কাছ থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করে ঢাকার চক্র। সম্প্রতি এমনি একটি চক্রের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে মাদক নিয়ন্ত্রক অধিদপ্তর।
রাজধানীর কদমতলীর মুরাদপুর এলাকার দুটি বাড়ি থেকে ১৯ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এ সময় মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হলেন রাজধানী কদমতলীর মুরাদপুর এলাকার মো. জুলহাস তালুকদার (৪৫) ও শেখ মো. নজরুল ইসলাম (৪০)।
মাদক নিয়ন্ত্রক অধিদপ্তরের খিলগাঁও সার্কেলের পরিদর্শক সুমনুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘মুরাদপুর এলাকার জুলহাস তালুকদারের বাসা থেকে পাঁচ হাজার এবং নজরুল ইসলামের বাসা থেকে ১৪ হাজার ১০০ ইয়াবাসহ ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করি। এরা ইয়াবা ব্যবসায়ী।’
সুমনুর রহমান বলেন, এই চক্র ১৫-২০ জনের মাধ্যমে কক্সবাজার থেকে ঢাকায় ইয়াবা আনে। প্রথমে কয়েকটি ইয়াবা একত্র করে স্কচটেপ দিয়ে পেঁচানো হয়। এতে এটি একটি বড় ক্যাপসুলের মতো হয়। তারপর সেই ক্যাপসুল পাকা কলা ব্যবহার করে বহনকারী গিলে পেটে ঢুকিয়ে নেন। বহনকারীরা সবাই গরিব নারী-পুরুষ। এঁদের কাউকেই গ্রেপ্তার করা যায়নি।
সুমনুর রহমান আরো বলেন, একজন একবারে সর্বোচ্চ আড়াই থেকে তিন হাজার ইয়াবা পেটে করে নিয়ে আসেন। এভাবে নিয়ে আসা খুব বিপজ্জনক। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ইয়াবা বের করতে না পারলে মৃত্যুও হতে পারে বহনকারীদের।
সুমনুর রহমান বলেন, ‘গ্রেপ্তার হওয়া দুই ইয়াবা ব্যবসায়ীকে মুরাদপুরের লোকজন সিলভারের হাঁড়ি-পাতিলের ব্যবসায়ী হিসেবেই চেনেন। তবে আমরা অনুসন্ধান করে দেখেছি, তাঁরা এই ব্যবসার আড়ালেই তিন বছর ধরে ইয়াবার ব্যবসা করে আসছেন।’ গ্রেপ্তার দুজনকে খিলগাঁও থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। মাদক নিয়ন্ত্রক আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন সুমনুর রহমান।