পাইলট আবিদের স্ত্রী আফসানা শঙ্কামুক্ত নন
দুই দফা অস্ত্রোপচারের পরও শঙ্কামুক্ত নন নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত পাইলট আবিদ সুলতানের স্ত্রী আফসানা খানম। রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউতে) লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে তাঁকে।
নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের ইন্টারভেনশনাল নিউরোলজি বিভাগের চিকিৎসক ড. সিরাজি শাফিকুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘রোববার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে আফসানা খানম স্ট্রোক করেন। এর পর পরই তাঁকে উত্তরার একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আরো খারাপ হলে এখানে নিয়ে আসে স্বজনরা। তখন তাঁর মস্তিষ্কের ডান দিকের রক্তনালির প্রবাহ একেবারে বন্ধ ছিল।’
শাফিকুল ইসলাম আরো বলেন, ‘প্রথমে তাঁর সিটি স্ক্যান এবং সিটি এনজিওগ্রাম করা হয়। এরপর সকাল ১০টার দিকে মেকানিক্যাল থ্রমব্যকটমি অপারেশনের মাধ্যমে জমাট রক্তটাকে বের করে আনা হয়। তারপর রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক হয়। তখন তাঁকে আইসিইউতে রাখা হয়।’
এরপর রাত ১১টার আফসানা খানম আবার স্ট্রোক করেন। রোববার দিবাগত রাত ১টার দিকে আবার তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয় বলে জানান এই চিকিৎসক। তিনি বলেন, ‘অপারেশন শেষে তাঁকে আবারও আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। তিনি অবজারভেশনে আছেন। প্রথম থেকেই তাঁর অবস্থা শঙ্কামুক্ত না।’
এখন আফসানা খানমের অবস্থা কেমন এমন প্রশ্নের উত্তরে চিকিৎসক বলেন, ‘যখন তাঁকে হাসপাতালে আনা হলো তারপর থেকেই তাঁর অবস্থা খুবই ক্রিটিক্যাল। এদিকে আবার তাঁর আনকন্ট্রোল ডায়াবেটিস আছে যেটা আরো সমস্যা। তার অপারেশন সাকসেসফুল হলেও অবস্থা এখনো ঝুকিপূর্ণ।’
আইসিইউতে দায়িত্বরত চিকিৎসক উজ্জ্বল কুমার মল্লিক এনটিভি অনলাইনকে জানান, আফসানার যে চিকিৎসা তাঁদের হাসপাতালে দেওয়া হচ্ছে, বিশ্বের সব চেয়ে ভালো হাসপাতালেও সেই একই চিকিৎসা দেওয়া হতো। বরং এখানে তিনি বেশি সুবিধা পাচ্ছেন।
এই চিকিৎসক বলেন, ‘আমাদেরও তো খারাপ লাগা বোধ কাজ করছে। কয়েকদিন আগে তাঁর স্বামী মারা গেলেন। এখন তাঁর এই অবস্থা। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টাটা করছি।’
ইনস্টিটিউটের যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক বদরুল আলম বলেন, আফসানার চিকিৎসার জন্য একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। ৭২ ঘণ্টা না গেলে কিছু বলা যাবে না। তবে তিনি শঙ্কামুক্ত নন।
গত ১২ মার্চ কাঠমান্ডুতে ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হয় ইউএস-বাংলার বিমান। এ সময় ক্রু ও যাত্রীসহ মোট ৭১ জন আরোহী ছিল বিমানে। এদের মধ্যে ২৬ বাংলাদেশিসহ ৫১ জন নিহত হয়। অন্য তিন বাংলাদেশির লাশ এখনো শনাক্ত না হওয়ায় নেপাল থেকে নিয়ে আনা হয়নি।