দরজার সামনে পড়েছিল সাজেদার দগ্ধ লাশ
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় বাড়িতে আগুন লেগে সাজেদা (১০) নামের এক মানসিক প্রতিবন্ধী শিশু মারা গেছে। গতকাল রোববার গভীর রাতে এই আগুন লাগে। আজ সোমবার সকালে সাজেদাকে দাফন করা হয়।
অগ্নিকাণ্ডে সাজেদাদের গোয়ালঘরে থাকা তিনটি ছাগল ও দুটি ঘর পুড়ে লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে পরিবারটি জানিয়েছে।
আজ সকালে শিবচর থানাধীন নিলখী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানা যায়নি।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও গ্রামের লোকজন জানায়, গতকাল গভীর রাতে শিবচরের নিলখী ইউনিয়নের কলাতলা চরকামারকান্দি গ্রামের দিনমজুর কানাই মাদবরের বসতঘরে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। নিমিষেই আগুন পাশের গোয়ালঘরে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন কানাই মাদবর, তাঁর স্ত্রী ইসমত আরা ও তাঁদের ১০ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী মেয়ে সাজেদা।
আগুন লেগেছে বুঝতে পেরে কানাই মাদবর ও তাঁর স্ত্রী দিশেহারা হয়ে দৌঁড়ে ঘর থেকে বের হয়ে গেলেও সাজেদাকে আনতে ভুলে যান। বাইরে এসে সবাই যখন আগুন নেভাতে ব্যস্ত তখন শিশুটির মা তাঁর স্বামীকে মেয়ের কথা জিজ্ঞেস করেন। এ সময় সাজেদাকেও বাইরে বের হতে দেখেছিলেন বলে জানান তিনি।
এ সময় তাঁরা মনে করেন সাজেদা হয়তো অন্য কোনো ঘরে আশ্রয় নিয়েছে। গ্রামের লোকজন প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তখন ঘরের দরজার সামনে পুড়ে যাওয়া অবস্থায় সাজেদার লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
সাজদোর মা ইসমত আরা বলেন, ‘আমরা সাজেদাকে নিয়ে ঘুমিয়েছিলাম। হঠাৎ ঘরের চালায় আগুন দেখে তাড়াহুড়ো করে ঘর থেকে বাইরে আসি। পরে সাজেদাকে খুঁজে না পেয়ে আগুন নিভানোর পর ঘরে ওর আগুনে পোড়া লাশ দেখতে পাই।’
সাজেদার বাবা কানাই মাদবর বলেন, ‘আমরা যখন দিশেহারা হয়ে ঘর থেকে বের হই তখন সাজেদা আমাদের পেছনেই ছিল। আগুন তখন দাউ দাউ করে জ্বলছিল। আমার মনে হয় সাজেদা বের হওয়ার সময় উপর থেকে ওর ওপর টিনের চাল খসে পড়ায় ও আর বের হতে পারেনি।’