দুই শিক্ষককে গাড়িতে তোলার পর একজনকে মুক্তি!
রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার ডাকরা ডিগ্রি কলেজের দুই শিক্ষককে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আজ শনিবার ক্লাস শেষে মোটরসাইকেলে ফেরার পথে উপজেলার অনুপমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে তাঁদের তুলে নেওয়া হয়। তবে এদের একজনকে সন্ধ্যায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, তাঁরা ঘটনাটি সম্পর্কে জানেন না।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে ডাকরা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আবদুর রউফ জানান, শনিবার বেলা ১১টার দিকে ডাকরা ডিগ্রি কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক শফিকুর রহমান উজ্জ্বল ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক বজলুল ইসলাম কলেজের ক্লাস শেষে মোটরসাইকেলে করে চারঘাটে যাচ্ছিলেন দুই শিক্ষক। তাঁরা চারঘাট-আড়ানী সড়কের অনুপমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছালে সেখানে একটি কালো রংয়ের মাইক্রোবাসে থাকা কয়েকজন নিজেদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে তাঁদের পথরোধ করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই দুই শিক্ষককে ওই মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নিয়ে চলে যান। বিষয়টি মৌখিকভাবে চারঘাট মডেল থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়।
ঘটনার সময় একই পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন ডাকরা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ। তিনি জানান, একটি কালো মাইক্রোবাসে দুই শিক্ষককে তোলা হচ্ছে দেখে তিনি এগিয়ে যান। এ সময় মাইক্রোবাসের একজন তাঁকে হাতের ইশারায় কাছে যেতে নিষেধ করেন। এরপরই দুই শিক্ষককে নিয়ে মাইক্রোবাসটি চারঘাটের দিকে চলে যায়। মাইক্রোবাসের সামনে একটি মোটরসাইকেলও ছিল।
শিক্ষক বজলুর রহমানের বাড়ি চারঘাটের রায়পুর গ্রামে। তিনি চারঘাট উপজেলা সদরে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন। শফিকুর রহমানের বাড়ি উপজেলার আস্করপুর গ্রামে।
এর মধ্যে বজলুর রহমানকে ছেড়ে দিয়েছে অপহরণকারীরা। শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। তিনি বলেন, যারা তাঁকে তুলে নিয়েছিল, তিনি তাদের চেনেন না। অপহরণকারীরা পাবনার দাশুরিয়া এলাকার পরে একটি জলাশয়ের ভেতরে তাঁকে নামিয়ে দিয়ে পকেটে ২০০ টাকা দিয়ে চলে যেতে বলে। এ সময় তাঁকে ভয়ভীতি দেখানো হয়। তাঁর সঙ্গে থাকা অপর শিক্ষক উজ্জ্বলকে তারা নিয়ে গেছে।
অপহৃত শিক্ষক শফিকুর রহমান উজ্জ্বলের ছোট ভাই মিলন জানান, তাঁর ভাইকে ঠিক কি কারণে বা কারা উঠিয়ে নিয়ে গেছেন, তা তাঁরা জানেন না।
এ বিষয়ে জানতে রাজশাহী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর্জা আবদুস সালামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, চারঘাট থানা থেকে এ ধরনের অভিযোগ তিনি শুনেছেন। তবে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ দুই কলেজ শিক্ষকে আটক করেনি।
ওসি আরো জানান, ওই দিকে তো টাকাপয়সা লেনদেনের ঘটনা নিয়ে অপহরণ নাটক সাজানো হয়। এটাও সেই রকম ঘটনা কি না কে জানে।
চারঘাট মডেল থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘কলেজ কর্তৃপক্ষের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা কাজ শুরু করছি। সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’
রাজশাহী র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মাহাবুবুল আলম জানান, শনিবার সকালে চারঘাট এলাকায় র্যাব এ ধরনের কোনো অভিযান পরিচালনা করেনি। তাই বিষয়টি তিনি জানেন না।