কোটা নিয়ে সোমবারের মধ্যে গেজেট চান মোশাররফ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, কোটা বাতিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণার বাস্তবায়ন চায় বিএনপি। আর সে জন্য আগামী রবি বা সোমবার এ বিষয়ে গেজেট প্রকাশ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ছাত্ররা চেয়েছিল কোটা সংস্কার করা হোক। ২০ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা হোক। কিন্তু কোটা সংস্কার না করে ছাত্রদের আন্দোলনের একপর্যায় ক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী কোটা পদ্ধতিই বাতিল করে দিলেন। এখন আগামী রোববার-সোমবারের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। তা না হলে আমরা বিশ্বাস করি না, আপনি আসলেই কোটা বাতিল বা সংস্কার চান।’
আজ শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দল আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় খন্দকার মোশাররফ এসব কথা বলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের আন্দোলন মেনে নিয়েছেন। তিনি রাগ করে বলেন বা যেভাবে বলেন, আমরা তাঁর কথা বিশ্বাস করতে চাই। আর সে জন্য আগামী সপ্তাহে অবশ্য কোটা বাতিলের বিষয়ে গেজেট প্রকাশ করতেই হবে। তাহলে আমরা তাঁর কথায় আস্থা রাখতে পারব।’
‘আমাদের নেত্রী যখন ভিশন ২০৩০ ঘোষণা করেছেন, তখন তিনি বলেছেন সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা শিথিল করা হবে। এবাররের ছাত্রদের আন্দোলনও ছিলো কোটা সংস্কার করার, বাতিলের নয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী রাগ করে সেটি বাতিলই করে দিলেন।’
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে যারা আন্দোলনে গিয়েছিল, নেতৃত্ব দিয়েছিল তাদের হল থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে। তাদের নামে মামলা দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন খন্দকার মোশাররফ।
শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনের কাছে মাথা নত করে প্রধানমন্ত্রী কোটা পদ্ধতি তুলে নিয়েছেন মন্তব্য করে বিএনপির সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, ‘এই আন্দোলনে কোনো মামলা থাকতে পারে না। যাদের নামে মামলা হয়েছে, আমি অনতিবিলম্বে তাদের নামে করা সব মামলা তুলে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলন ছিল যৌক্তিক। আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে অনেক আগে দাবি জানিয়েছিলাম, প্রতিবন্ধী, নৃগোষ্ঠী ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ছাড়া আর কাউকে কোটা দেওয়া যাবে না। ছাত্রদেরও একই দাবি। তাই আমরা সংবাদ সম্মেলন করে এই আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছি।’
জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে বিএনপির এই বলেন, ‘আগের সব জাতীয় নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। কারণ নির্বাচনের কয়েক দিন আগে থেকে মাঠে সেনাবাহিনী থাকলে সাধারণ ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন।’
খন্দকার মোশাররফ বলেন, গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন ইসি ও সরকারের জন্য বড় পরীক্ষা। এই নির্বাচন কতটা নিরপেক্ষভাবে করতে পারে সেটি দেখবে জনগণ। তারা যদি এ দুই সিটিতে সুষ্ঠু নির্বাচন না করতে পারে তাহলে প্রমাণিত হবে তাদের দিয়ে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এ সময় তিনি গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনসহ সব স্থানীয় নির্বাচনেও সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানান।
সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন কবির বেপারীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন কণ্ঠশিল্পী মনির খান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মাদ রহমাতুল্লাহ, সাবেক সংসদ সদস্য বিলকিস ইসলাম প্রমুখ।