মাদ্রাসাছাত্রীকে গণধর্ষণ, তিন যুবককে যাবজ্জীবন
খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় এক মাদ্রাসাছাত্রীকে গণধর্ষনের ঘটনায় তিন যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে আসামিদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরো এক বছর করে সাজা দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় খাগড়াছড়ি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা দায়রা জজ রতেশ্বর ভট্টাচার্য এ রায় দেন। ঘটনার প্রায় চার বছর পর আজ এই রায় দেওয়া হলো।
সাজা পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার বড় মেরুংয়ের বাসিন্দা মো. ইসমাইল হোসেন, ইমন হোসেন ও ফারুক মিয়া।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৮ জুন দীঘিনালার একটি মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ওই ছাত্রী পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরছিল। নির্জন এলাকায় দুপর সোয়া ১টার দিকে ওই তিন যুবক তার পথরোধ করে মুখ, হাত ও পা বেঁধে ফেলে এবং পাশের তামাক ক্ষেতে নিয়ে ধর্ষণ করে। তারা এই ঘটনাটি মোবাইলে ভিডিও করে রাখে এবং ঘটনা কাউকে জানালে ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয়।
এ ঘটনায় ওই দিন বিকেলেই নির্যাতিতা ছাত্রীর মা বাদী হয়ে দীঘিনালা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
আদালত তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, মামলার ২০ জন সাক্ষীর মধ্যে তিন চিকিৎসকসহ ১২ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। মামলার সাক্ষ্য প্রমাণে ধর্ষণের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯(৩) ধারায় তিন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হলো।
রায়ের পর্যবেক্ষণে আরো বলা হয়, এ অপরাধে আসামিদের মৃত্যুদণ্ড হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাদের বয়স বিবেচনায় আদালত মৃত্যুদণ্ডের পরির্বতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হলো।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন ওই ছাত্রীর মা। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি।’
আসামীপক্ষের আইনজীবী আবুল হোসেন জানান, রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন তারা।
এর আগে ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় পর্নোগ্রাফি আইনে দায়ের করা মামলায় প্রত্যেক আসামির পাঁচ বছর করে সাজা দিয়েছিলেন আমলী আদালত।