স্ত্রীকে খুন করে আত্মসমর্পণ, স্বামীর যাবজ্জীবন
ছয় বছর আগে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে আবদুল কুদ্দুস নামের এক ব্যক্তির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ বুধবার সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. আশরাফুল ইসলাম এই রায় দেন। আসামি আবদুল কুদ্দুস এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, আসামি আবদুল কুদ্দুস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিলেন। অন্যদিকে, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে পড়তেন নিহত মাশহুদা সুলতানা। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া অবস্থায়ই আবদুল কুদ্দুসের সঙ্গে মাশহুদা সুলতানার বিয়ে হয়।
এ সময় মাশহুদা রোকেয়া হলে থেকে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু বিয়ের পর মাশহুদাকে নিয়ে কুদ্দুস আলাদা বাসায় থাকতে চাইছিলেন। কিন্তু সেটা খুব ব্যয়বহুল হয়ে পড়বে বলে মানা করেছিল মাশহুদার পরিবার। এই নিয়েই তাঁদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলতে থাকে। একপর্যায়ে কুদ্দুসের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের কথাও ভেবেছিলেন মাশহুদা।
একপর্যায়ে ২০১২ সালের ২২ জুন আবদুল কুদ্দুস তাঁর শ্বশুরবাড়ি সাতক্ষীরার খানপুর গ্রামে বেড়াতে আসেন। এরপর ওই রাতে মাশহুদাকে কলার সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেন তিনি। পরে অচেতন অবস্থায় রশি ও গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে মাশহুদাকে হত্যা করেন। পরে ভোরে ফজরের নামাজ আদায়ের কথা বলে ওই বাসা থেকে বেরিয়ে সাতক্ষীরা থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন আবদুল কুদ্দুস। জানান, রাতেই স্ত্রীকে হত্যার কথা।
পরে প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন।
দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ রায়ে আদালত বলেন, স্ত্রীকে হত্যার বিষয়টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হলেও কুদ্দুসের বয়স বিবেচনা করে তাঁকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হলো। একই সঙ্গে তাঁকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এ মামলায় সরকারপক্ষের আইনজীবী হিসেবে মামলা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পিপি কার্তিক চন্দ্র দাস। আসামি পক্ষে ছিলেন হায়দার আলী ও আবুবকর সিদ্দিক।