চট্টগ্রামে জব্বারের বলী খেলায় চ্যাম্পিয়ন জীবন
চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলী খেলায় এবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার তারেকুল ইসলাম জীবন। কুমিল্লার শাহজালাল বলীকে হারিয়ে নতুন শিরোপা তুলেন জীবন।
খেলা শেষে বিজয়ীদের হাতে ক্রেস্ট ও পুরস্কার তুলে দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
এর আগে লালদীঘী মাঠে বাঁশের বেড়া দিয়ে কৃত্রিমভাবে বলীর টার্ফ তৈরি করা হয়। সেখানে একে একে শক্তি প্রদর্শন করে শতাধিক বলী। তরুণ থেকে বৃদ্ধ কুস্তিগীরের মনোমুগ্ধ বাউট দেখে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে দর্শকরা। মুখর করা করতালীতে ফেটে পড়ে পুরো মাঠ। আর টার্ফের চারদিকে ঘুরে ঘুরে বলীদের উৎসাহ দেয় বাদ্য দল।
তবে বলী খেলার ফাইনালে হেরে খেলা নিয়ে অভিযোগ করেন পরাজিত শাহজালাল। তবে চ্যাম্পিয়ন হয়ে আনন্দে আত্মহারা জীবন।
১৯০৯ সালে সূচনা হওয়া আবদুল জব্বারের বলী খেলাকে ঘিরে নগরীর কোতোয়ালির লালদীঘির ময়দানের বিশাল এলাকা জুড়ে চলছে উৎসব। শুরু হয়েছে তিনদিনের মেলা। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে যুবসমাজকে সংগঠিত করতে স্থানীয় ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার এ প্রতিযোগিতার প্রচলন করেন। সেই যুদ্ধের দিন না থাকলেও বন্ধুত্বের এক অন্যরকম আবহে এ খেলায় অংশ নিতে আসেন দেশের নানা প্রান্তের বলীরা।
খেলাকে ঘিরে মেলার বিশাল আয়োজনে অংশ নিতে অনেকে অপেক্ষা করে বাকি ১১ মাস। ঘরের ব্যবহার করা নিত্যপণ্যের বিপুল সমাহার বসে পুরো এলাকায়।
মেলায় আসা আইনজীবী নুরুল ইসলাম জানান, এ মেলার জন্য তিনি পুরো বছর জুড়ে অপেক্ষা করেন। এটি এখন সংস্কৃতির একটি অংশ। তিনি অনেক নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনেছেন।
স্কুল শিক্ষক দিপিকা জানান, স্কুল থেকে ফেরার পথে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলো মেলা থেকে নিয়ে যান। মনে হয় ছোট বেলায় ফিরে গেছেন।
এদিকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজ সামগ্রীর বিপুল সম্ভার মেলা আনা হলেও যানবাহন ব্যয় বৃদ্ধিসহ লোকসানের পাল্লা ভারী হওয়ায় হতাশ ব্যবসায়ীরা। ঢাকা থেকে মাটির পণ্য নিয়ে আসা ব্যবসায়ী আবদুল জানান, শ্রমিকের বেতন বেড়ে গেছে। যানবাহন ভাড়া বেশি হওয়ায় আগের মতো পোষায় না।
জব্বারের বলী খেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি জহুর লাল হাজারী জানান, এই খেলাকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত করতে উদ্যোগ নিতে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন।