অরুন চন্দ্র যাবেন তীর্থে, ছুটি মঞ্জুর হজের জন্য!
গোপালগঞ্জের সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক অরুন চন্দ্র বিশ্বাস ভারতে ধর্মীয় ও দর্শনীয় স্থান ভ্রমণের জন্য ২১ দিন ছুটি চেয়ে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সৌদি আরবে হজে যাওয়ার জন্য তাঁর ৫০ দিনের ছুটি মঞ্জুর করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সরকারি কলেজ-৪ শাখা। এ নিয়ে একটি প্রজ্ঞাপনও জারি করে তারা।
সনাতন ধর্মাবলম্বী একজন শিক্ষককে পবিত্র হজ পালনের জন্য ছুটি মঞ্জুর করার ওই প্রজ্ঞাপন এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে অধ্যাপক অরুন চন্দ্র বিশ্বাস এনটিভি অনলাইনকে বলেন, তিনি ১ জুন থেকে ২১ জুন পর্যন্ত পবিত্র রমজান, জুমাতুলবিদা, শবে কদর, ঈদুল ফিতরে অবকাশকালীন ছুটিতে ধর্মীয় ও দর্শনীয় স্থান ভ্রমণের জন্য ভারতে যেতে গত ২২ মার্চ তাঁর কলেজের অধ্যক্ষের মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করেন। এ নিয়ে গত ৩০ এপ্রিল প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। কিন্তু তাঁর নামের পাশে ভুল দেশের নাম এবং ভ্রমণের উদ্দেশ্য ও সময়কাল লেখা আছে।
অরুন চন্দ্র বিশ্বাস জানান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই ভুল করেছে। সংশোধিত ছুটির জন্য তিনি পুনরায় আবেদন করবেন।
কী ছিল প্রজ্ঞাপনে
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সরকারি কলেজ শাখা-৪ থেকে জারি করা আদেশে (স্মারক নম্বর- ৩৭.০০.০০০০.০৮.০১০.৪৩৪) বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারে দুজন শিক্ষকের ছুটি মঞ্জুর করা হয়। এতে প্রথমেই ছিল অধ্যাপক অরুন চন্দ্র বিশ্বাসের নাম। দেশের নামের ঘরে ছিল সৌদি আরব। ভ্রমণের উদ্দেশ্য ও সময়কালের ঘরে লেখা ছিল, ‘পবিত্র হজ্জ পালনের উদ্দেশ্যে ২৫.০৭.২০১৮ তারিখ হতে ১২.০৯.২০১৮ তারিখ পর্যন্ত ৫০ (পঞ্চাশ) দিন অথবা দায়িত্বভার হস্তান্তরের তারিখ হতে ৫০ (পঞ্চাশ) দিন।’
যে আদেশে অরুন চন্দ্র বিশ্বাসকে ছুটি দেওয়া হয়েছে, একই আদেশে নারায়ণগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাছিমা আক্তারকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। তাঁকে অবশ্য পবিত্র ওমরাহ পালনের জন্য ১ জুন থেকে ২১ জুন অথবা দায়িত্বভার হস্তান্তরের তারিখ থেকে ২১ দিন ছুটি মঞ্জুর করা হয়।
এই ছুটি মঞ্জুরের প্রজ্ঞাপন নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তারা কেউ নাম প্রকাশ করে বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তারা বলেছেন, ভুল প্রজ্ঞাপন দেখার পর তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে সেটি সরিয়ে ফেলেছেন। পবিত্র হজ পালনের জন্য অন্যজনের নাম বসাতে গিয়ে ভুলবশত অধ্যাপক অরুন চন্দ্র বিশ্বাসের নাম কম্পোজ করা হয়েছে। এটি একটি মুদ্রণজনিত করণিক ভুল।