মহাকাশে আজ যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট
দেশের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু-১’ কক্ষপথে পাঠানোর মাধ্যমে মহাকাশে যোগাযোগ উপগ্রহ পাঠানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের ৫৭তম দেশ।
আমেরিকান সংস্থা স্পেসএক্স স্থানীয় সময় বিকেল ৪টার পর (বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার পর) ফ্যালকন ৯ রকেটের মাধ্যমে ফ্লোরিডার কেপ ক্যানভেরাল উৎক্ষেপণ মঞ্চ থেকে স্যাটেলাইটটি কক্ষপথে পাঠাবে।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বাসসকে বলেন, ‘৩ দশমিক ৭ টন ভরের বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট ইতিমধ্যেই উৎক্ষেপণ মঞ্চের রকেটের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে এবং এটিকে ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রি অরবিটাল স্লটে পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় সব কারিগরি প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।’
উৎক্ষেপণ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গত ৪ মে ফ্যালকন ৯ রকেটের ‘ফায়ার টেস্ট’ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
এর আগে ফ্লোরিডা থেকে ৪ মে বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণের তারিখ নির্ধারিত হয়েছিল। তবে কারিগরি কারণে এই তারিখ পরিবর্তন করে ৭ মে করা হয়। পরে নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
এটি গত ডিসেম্বরে উৎক্ষেপণের কথা ছিল তবে কারিগরি এবং প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে একাধিকবার তারিখ পরিবর্তন করা হয়।
সরকার ২০১৫ সালে ‘বঙ্গবন্ধু-১’ স্যাটেলাইট প্রকল্প গ্রহণ করে এবং এটি নির্মাণে একই বছরের নভেম্বরে ফ্রান্সের থ্যালাস অ্যালেনিয়া কোম্পানির সঙ্গে ২৪৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর করে। স্যাটেলাইটের জন্য মোট ব্যয় দুই হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা, এরমধ্যে এইচএসবিসি ঋণ হিসেবে এক হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা সরবরাহ করছে।
যদিও বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট বিদেশ থেকে ক্রয় করা হয়েছে এবং এটি উৎক্ষেপণও বিদেশ থেকেই করা হবে তবে দেশ থেকেই এই স্যাটেলাইটটি নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
স্যাটেলাইটটি নিয়ন্ত্রণের জন্য ইতিমধ্যেই গাজীপুরের জয়দেবপুরে এবং রাঙামাটির বেতবুনিয়ায় একটি করে নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এ ৪০ ট্রান্সপন্ডার রয়েছে, যার ফলে স্যাটেলাইটটি সার্কভুক্ত দেশগুলো ছাড়াও ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, তুর্কিমিনস্তান, কাজাকিস্তান এবং তাজিকিস্তানেও সেবা দিতে পারবে।
৪০ ট্রান্সপন্ডারে এর মধ্যে বাংলাদেশ ২০টি ব্যবহার করবে। অন্য ২০ ট্রান্সপন্ডার ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়ার মতো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে সহজেই ভাড়া দেওয়া যাবে।
ফ্রান্সের কানে কয়েক মাস আগে থালেস এলিনিয়া স্পেস ফ্যাসিলিটিস কোম্পানি স্যাটেলাইটটি নির্মাণ করে তাদের হেফাজতে রাখে। এরপর গত ২৯ মার্চে স্যাটেলাইটি কক্ষপথে উৎক্ষেপণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় নেওয়া হয়।
এর কেইউ-ব্যান্ড বাংলাদেশসহ বঙ্গোপসাগর, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, শ্রীলংকা, ইন্দোনেশিয়া এবং ফিলিপাইন পর্যন্ত বিস্তৃত থাকবে।
অপরদিকে এর সি-ব্যান্ড বাংলাদেশ, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, মিয়ানমার, ভুটান, নেপাল, শ্রীলংকা, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, তাজিকিস্তান, কিরগিজস্তান, উজবেকিস্তান, তুর্কিমিস্তান এবং কাজাকিস্তানের একটি অংশ পর্যন্ত বিস্তৃত থাকবে।