‘মুজিব আদর্শের সৈনিকের হাতে’ নেতৃত্ব চান সাবেকরা
আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলন আজ শুক্রবার। সম্মেলনের মাধ্যমে বেছে নেওয়া হবে সংগঠনটির আগামী দিনের নতুন নেতৃত্ব। একই সঙ্গে সম্মেলন হয়ে যাওয়া তিন সাংগঠনিক ইউনিট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা মহানগরীর দুই অংশের নেতৃত্বও ঘোষণা হবে কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে।
ছাত্রলীগের ২৯তম সম্মেলন নিয়ে আলোচনা সামনে আসার পরপরই শীর্ষ নেতৃত্বে আসার জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছিলেন পদপ্রত্যাশীরা। কিন্তু তাঁদের মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধেই আসছে নানা অভিযোগ। অন্য সংগঠনের আদর্শ ধারণ করেও ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশের গুরুতর অভিযোগও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক হওয়া নেতারাও চান সিন্ডিকেটমুক্ত, অনুপ্রবেশমুক্ত নেতৃত্ব। সংগঠনটির কয়েকজন নেতার এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
ছাত্রলীগের বিদায়ী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল হাসান ফারুক এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘কোনো অনুপ্রবেশকারী বা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ছাত্রলীগের নেতা নির্বাচিত হোক, সেটা আমরা চাই না। কারণ এসব লোক নেতৃত্বে এলে ছাত্রলীগের বদনাম হয়। যার দাগ মূল দল আওয়ামী লীগের গায়েও লাগে।’
ফারুক বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দেওয়া হোক এমন লোকদের হাতে, যারা অন্তরে মুজিব আদর্শকে লালন করে রাজনীতি করে। তাহলে তারা কখনো সংগঠনের গঠনতন্ত্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কাজ করবে না। বিতর্কে জড়াবে না কোনোভাবেই।’ তিনি আরো বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের এবারের নেতৃত্ব নির্বাচনে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেটি অত্যন্ত সময়োপযোগী। তার এ সিদ্ধান্ত ছাত্রলীগকে আগামী দিনে বিতর্ক ও অনুপ্রবেশমুক্ত নেতৃত্ব উপহার দেবে। যারা শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করে ভিশন-২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নে কাজ করে যাবে।’
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অমিত কুমার দাস বলেন, ‘ছাত্রলীগ হবে মুজিব আদর্শের সৈনিক, কোনো অনুপ্রবেশকারী, জামায়াত-শিবির বা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্তরা নয়।’ তিনি বলেন, ‘একজন মুজিব আদর্শের সৈনিক কখনো ছাত্রলীগের সুনাম ক্ষুণ্ণ হতে দেবে না। কারণ তারা বুকে বঙ্গবন্ধুকে লালন করে, জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে রাজনীতি করে। কিন্তু যদি বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে সম্পৃক্ত কেউ ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসে, তাহলে তারা কখনো ছাত্রলীগকে নিজেদের সংগঠন মনে করবে না। কারণ তাদের মনে লালিত হবে মুজিববিরোধী আদর্শ।’
অমিত বলেন, ‘আমরা চাই সব বিতর্কের বাইরে থাকা, সত্যিকারের ছাত্রবান্ধব মেধাবীদের হাতেই ছাত্রলীগের পতাকা তুলে দেওয়া হোক। যারা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করবে।’
ছাত্রলীগের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থ বলেন, ‘প্রকৃত মেধাবী, সৎ, মুজিব আদর্শের অকুতোভয় সৈনিকের হাতে ছাত্রলীগের আগমী দিনের নেতৃত্ব দেওয়া হোক। যারা মনেপ্রাণে একজন মুজিব সৈনিক হিসেবেই রাজনীতি করবে।’
সঞ্জীবন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল বাংলা হবে সোনার বাংলাদেশ। ছাত্রলীগ তার দেখানো পথেই হাঁটবে। কিন্তু অনুপ্রবেশকারী, অযোগ্যদের হাতে নেতৃত্ব গেলে সংগঠনের পাশাপাশি মূল দল আওয়ামী লীগেরও বদনাম হবে। তাই আমি বিশ্বাস করি, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রকৃত সৈনিকের হাতেই যাবে দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছাত্রলীগের নেতৃত্ব।’