জাল ভোটে বাধা, হোটেলে ঢুকে বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে জখম
নরসিংদীর মাধবদীতে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে জাল ভোটে বাধা দেওয়ায় হোটেলে ঢুকে বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
আহতদের স্বজনরা অভিযোগ করেন, মাধবদী পৌর মেয়রের ভাগ্নে আরিফের নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়েছে ।
মঙ্গলবার দুপুর ৩টার দিকে মাধবদী বাসস্ট্যান্ডে মিতালী হোটেলে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলো পরাজিত ইউপি সদস্য প্রার্থী নাজমা আক্তারের ছেলে জাহিদ হাসান ও তাঁর স্বামী আলী আজগর। আজগর মিতালী হোটেলের মালিক।
পুলিশ ও আহতদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ৭ মে মাধবদী নূরালাপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য হিসেবে নির্বাচন করেন সেলিনা বেগম। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন নাজমা আক্তার।
নির্বাচনে ভোটগ্রহণের সময় প্রার্থী সেলিনার পক্ষে শামীম জাল ভোট দিচ্ছিলেন। এতে বাধা দেন নাজমা আক্তারের ছেলে জাহিদ হাসান। ওই সময় উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। বিষয়টি স্থানীয় ভাবে মীমাংসার আশ্বাস দিয়ে উভয়পক্ষকে শান্ত করা হয়।
শামীম মাধবদী পৌর মেয়র মোশারফ হোসেন মানিকের ভাগ্নে আরিফ হোসেনের বন্ধু। শামীম বিষয়টি আরিফকে জানান।
এই ঘটনার জেরে আজ দুপুর ৩টার দিকে আরিফ, শামীম ও আমানুল্লার নেতৃত্বে ছয় থেকে সাতজন মিতালী হোটেলে যান। সেখানে দোকানের মালিক আলী আজগর ও তাঁর ছেলে জাহিদ হাসনের ওপর হামলা চালায়। এ সময় জাহিদকে অস্ত্র দিয়ে মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন অংশে কুপিয়ে জখম করা হয়। হামলার সময় বাঁধা দেন জাহিদের বাবা। এ সময় তাঁকেও পিটিয়ে গুরুত্বর জখম করা হয়। পরে জাহিদ রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পরে। এক পর্যায়ে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তাঁরা পালিয়ে যান।
পরে স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে মাদবদী প্রাইম জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত ওই দুজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়।
জাহিদের মামা সেকান্দার আলী জানান, মেয়রের ভাগ্নে আরিফ, শামীম ও আমানুল্লার নেতৃত্বে দোকানে হামলা চালানো হয়। এ সময় তাঁরা আমার ভগ্নিপতি ও ভাগ্নেকে কুপিয়ে জখম করে। তাঁদেরকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মেয়রের ভাগ্নে আরিফ হোসেন বলেন, ‘আমি হোটেলে খাচ্ছিলাম। হঠাৎ গণ্ডগোল দেখে আমি তাঁদের সরিয়ে দেই। এ ঘটনার সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই।’
মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইলিয়াস মিয়া বলেন, ‘ইউপি নির্বাচনের দ্বন্দ্বের জের ধরে আরিফের নেতৃত্বে দোকানে দুই ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনা ঘটেছে বলে জানতে পেরেছি। অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’