খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিত চাইবে রাষ্ট্রপক্ষ
কুমিল্লায় বাস পোড়ানোর ঘটনায় হত্যা ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা দুটি মামলায় হাইকোর্ট বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ছয় মাসের যে অন্তর্বর্তীকালীন ছুটি দিয়েছেন, তা স্থগিত চেয়ে আবেদন করার প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।
আজ সোমবার সকালে বিচারপতি মো. আসাদুজ্জামান ও জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারান্তরীণ থাকাবস্থায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা এ দুটি মামলায় জামিনের আদেশ দেন।
তবে একই দিন আদেশের জন্য রাখা নড়াইলের মানহানির মামলাটির জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, নিম্ন আদালতের মামলাটিতে জামিনের আবেদন করা হয়েছে। সেটি সুরাহা না করেই উচ্চ আদালতে আসায় তা উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করা হয়েছে।
আদেশের কিছু পরেই তা স্থগিত চেয়ে আবেদনের কথা জানান রাষ্ট্রের প্রধান আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টে জামিন দেওয়া দুটি আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হবে। আমরা দুটি পিটিশন তৈরি করেছি। আজ দুপুরে চেম্বার আদালতে আবেদন করব।’
খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জানিয়েছেন, কুমিল্লায় দুটি নাশকতার ঘটনায় খালেদা জিয়াকে তিনটি মামলায় আসামি করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি বিস্ফোরক মামলা। আজ কুমিল্লার একটি নাশকতা ও একটি বিস্ফোরক মামলায় খালেদা জিয়া ছয় মাসের জামিন পেয়েছেন।
কুমিল্লার বাকি আরেকটি মামলায় আজ জামিন আবেদন করা হয়েছে বলে জানালেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
এদিকে, ঢাকার মানহানি ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে জন্মদিন পালনের অভিযোগে দায়ের করা দুটি মামলায় জামিনের জন্য আবেদন করেন খালেদা জিয়া। বাংলাদেশের মানচিত্র, জাতীয় পতাকা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত এবং মিথ্যা তথ্য দিয়ে জন্মদিন পালনের দুটি পৃথক অভিযোগে দায়ের করা মামলায় হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন তিনি।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের অনুমতি নিয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা এ আবেদন করেন। এ দুটি মামলায়ও এ সপ্তাহে শুনানি হতে পারে বলে জানা গেছে।
গত ১৬ মে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে দেওয়া হাইকোর্টের জামিন বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। জামিন পেলেও তিনি মুক্তি পাননি।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন নিম্ন আদালত। এ মামলার অপর আসামি খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বাকি পাঁচজনকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তাঁদের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা জরিমানাও করা হয়।
রায়ের পর পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারকে বিশেষ কারাগার ঘোষণা দিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে সেখানে রাখা হয়েছে।