দেশ ও গণতন্ত্র গভীর সংকটে : নজরুল
দেশ ও গণতন্ত্র আজ গভীর সংকটের মধ্যে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়কারী নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, দেশের সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে সরকার। গণতন্ত্র, বিচার বিভাগ, সংসদ, শেয়ারবাজার, ব্যাংক লুট সব করছে আওয়ামী লীগ।
আজ বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনের একটি হোটেল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের নিয়ে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের ইফতার মাহফিলে নজরুল ইসলাম খান এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার কারাবাসের বিষয়ে নজরুল বলেন, খালেদা জিয়া সরকারের অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছিলেন বলেই তাঁকে কারাগারে বন্দি করা হয়েছে। তিনি অসুস্থ সেজন্য তাঁকে বিশেষায়িত হাসপাতালে নেওয়ার সুপারিশ করেছিলেন চিকিৎসকরা। কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়নি। চিকিৎসা দেওয়া হয়নি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা যদি করা না হয়, তাহলে তিনি প্যারালাইজড হয়ে যেতে পারেন, দৃষ্টিহীন হয়ে যেতে পারেন। সরকার চায় তিনি পঙ্গু হয়ে যাক, দৃষ্টিহীন হয়ে যাক।
দেশজুড়ে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানের নামে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের’ বিরুদ্ধে জনপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে সর্বস্তরের মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, দুঃশাসন থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে ফেরাতে পাখির মতো গুলি করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। এভাবে চলতে পারে না। এই অভিযানকে আমরা শুরু থেকে প্রশ্নবিদ্ধ বলেছি।
নজরুল ইসলাম খান অভিযোগ করে বলেন, বিচারবহির্ভূত এইসব হত্যার পেছনে ভিন্ন কারণ আছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের টার্গেট, সে উদ্দেশ্যে কক্সবাজারের কমিশনার একরাম সাহেবকে হত্যা করা হলো। এলাকার সবাই বলছেন, তিনি ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। প্রকাশিত অডিও প্রমাণ করে যে মাদকবিরোধী এই অভিযান সরকার ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করছে। এভাবে বিচারবহির্ভূত হত্যা চলতে পারে না। আমরা কি কোনো জংলি দেশে আছি নাকি? এর বিরুদ্ধে দেশবাসীকে রুখে দাঁড়াতে হবে।
ট্র্যাফিক সিস্টেম থেকে শুরু করে দেশের সবকিছুতে অচল অবস্থা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করে এই নেতা বলেন, সরকার গণতন্ত্র ধ্বংস করে দিয়েছে। সুশাসন বলতে দেশে আজ কিছু নেই। যে কারণে জনজীবন অতিষ্ট আজ। কেউ কোথাও বিচার পায় না। না আদালতে, না অন্য কোথাও।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নির্বাহী সভাপতি মাওলানা মনছুরুল হাসান রায়পুরী। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন দলের মহাসচিব মাওলানা শেখ মুজিবুর রহমান। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী সদস্য মাওলানা আবদুল হালিম, জাতীয় পার্টির (জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিম।
সেখানে আরো উপস্থিত ছিলেন ২০ দলীয় জোটের শরিক জাতীয় পার্টির (জাফর) সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আহসান হাবিব লিংকন, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ ও মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, মহানগর সদস্য সচিব মো. শহীদুননবী ডাবলু, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমান, বিজেপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আবদুল মতিন সাউদ, ডিএলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, মুসলিম লীগের মহাসচিব শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, এনডিপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, পিপলস লীগের মহাসচিব সৈয়দ মাহবুব হোসেন, খেলাফত মজলিশের যুগ্ম মহাসচিব মুহম্মদ শফিউল্লাহ, লেবার পার্টির (একাংশ) চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, অপরাংশের) চেয়ারম্যান এমদাদুল হক চৌধুরী, মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদী, জাগপার যুগ্ম সম্পাদক আসাদুর রহমান খান, ইসলামী ঐক্যজোটের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা শওকত আমীন।
ইফতারের আগে দেশ-জাতি, বিশ্ব মুসলিমের শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে দোয়া করা হয়। দোয়া পরিচালনা করে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহসভাপতি মুফতি গোলাম রহমান।