ছয় দফা দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
রাজধানীর ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সম্মুখে রক্ষিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে প্রধানমন্ত্রী এই শ্রদ্ধা জানান।
জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের পরে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি এই মহান নেতার প্রতি সম্মান জানানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
দলের সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে আরেকটি ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন।
এ সময় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ এবং মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহম্মদ ফারুক খান এবং ড. আবদুর রাজ্জাক, দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন এবং এনামুল হক শামীম এবং দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
পরে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের পক্ষ থেকে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়।
১৯৬৬ সালের ৭ জুন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ছয় দফা দাবির পক্ষে এবং পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে দেশব্যাপী তীব্র গণআন্দোলনের সূচনা হয়।
বঙ্গবন্ধুর জাদুকরি নেতৃত্বের অধীনে আওয়ামী লীগ পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের শোষণ-বঞ্চনা ও অধীনতা অবসানে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে ১৯৬৬ সালের ৭ জুন দিনব্যাপী হরতাল আহ্বান করে। আওয়ামী লীগের ডাকা এ হরতালে টঙ্গী, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে পুলিশ ও ইপিআরের গুলিতে মনু মিয়া, শফিক ও শামসুল হকসহ ১১ জন বাঙালি শহীদ হন।
এর পর থেকেই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আপসহীন সংগ্রামের ধারায় ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের দিকে এগিয়ে যায় পরাধীন বাঙালি জাতি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তাসখন্দ চুক্তিকে কেন্দ্র করে লাহোরে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের সাবজেক্ট কমিটিতে ছয় দফা উত্থাপন করেন এবং পরের দিন সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে যাতে এটি স্থান পায়, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু এই সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর এ দাবির প্রতি আয়োজক পক্ষ থেকে গুরুত্ব প্রদান করা হয়নি। তাঁরা এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেন।
প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু সম্মেলনে যোগ না দিয়ে লাহোরে অবস্থানকালেই ছয় দফা উত্থাপন করেন। এ নিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানের বিভিন্ন খবরের কাগজে বঙ্গবন্ধুকে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা বলে চিহ্নিত করা হয়।