নরসিংদীতে ট্রেনের ধাক্কায় দুই মেয়েসহ বাবার মৃত্যু
নরসিংদীতে ট্রেনের ধাক্কায় বাবা ও দুই মেয়েসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার সন্ধ্যায় সদর উপজেলার বাদুয়ারচরে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন নরসিংদী পৌর এলাকার বিলাশদী মহল্লার মোল্লা বাড়ির ভাড়াটিয়া হাফেজ মিয়া (৪০), হাফেজ মিয়ার মেয়ে তারিন আক্তার (১৪) ও তুলি আক্তার (২)।
নিহতের স্ত্রী নাজনিন বলেন, সেতুর অল্প একটু সামনে গিয়ে ছবি তুলছিল। হঠাত দেখি ট্রেন এসে গেছে। আমি নেমে আসি। কিন্তু মেয়ে ও তাদের বাবা নামতে পারেনি। পরে দেখলাম লোকজন ধরাধরি করে তাদের নিয়ে আসছে।
নিহত হাফেজ মিয়ার ভাই স্বপন বলেন, সকালে থেকেই ঘুরতে যাওয়ার জন্য ভাতিজি কান্না করছিল। তার বায়না রাখতেই ভাই সবাইকে নিয়ে বেড়াতে যায়। সন্ধ্যায় খবর পাই ভাতিজিরা ট্রেনে কাটা পরেছে। এরপর খবর পাই ভাইও নাই।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, নিহতরা সবাই নোয়াখালী জেলার বাসিন্দা। হাফেজ মিয়া স্থানীয় ভেলানগর বাজারে চা-পান বিক্রি করতেন। সোমবার বিকেলে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাদুয়ারচর রেল সেতু এলাকায় ঘুরতে যায়। বাবা-মেয়েসহ আরো অনেকেই রেল লাইনে দাঁড়িয়ে মোবাইলে সেলফি (ছবি) তুলছিল। এ সময় পাশে একটি মাইকে জোরে গান বাজছিল। তখন ঢাকা থেকে নোয়াখালীগামী উপকুল এক্সপ্রেস ট্রেন এসে পড়ে। ট্র্রেন আসার শব্দ না পাওয়ায় দুই মেয়ে নিয়ে লাইনের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন হাফেজ মিয়া। দ্রুত গতির ট্রেনটি তাদের ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই বাবা ও দুই শিশু মেয়ের মৃত্যু হয়।
নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিহত শিশু তুলির পাশে স্বজনের আহাজারি। ছবি : এনটিভি
পরে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দিলে নরসিংদী রেলওয়ে ফাঁড়ির পুলিশ দুর্ঘটনাস্থল পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসাপাতালে পাঠায়।
নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আবু সায়েম চৌধুরী বলেন, বিকেলে ঘোরাঘুরির সময় তারা রেল লাইনে উঠে পড়ে বলে জানতে পেরেছি। অতিরিক্ত লোক ও পাশে বিকটশব্দে গান বাজনার ফলে তারা ট্রেনের হর্ন শুনতে পারেনি। ফলে ট্রেনের ধাক্কায় তিনজনই নিহত হয়। আমরা আইনানুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নিচ্ছি।