মাদক সংশ্লিষ্টতা, ভৈরবে আ. লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা বহিষ্কার
মাদকদ্রব্য চোরাকারবারের সঙ্গে জড়িত থেকে দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগে কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌর আওয়ামী লীগের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক কামাল আহমেদ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক দ্বীন ইসলামকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার রাতে ভৈরব পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম বাকী বিল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক আতিক আহমেদ সৌরভ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়।
এর আগে পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আলী মনসুর রাজু ও সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন জামালের অপর এক ঘোষণায় দ্বীন ইসলামের বহিষ্কারাদেশ সম্পর্কেও জানানো হয়।
ভৈরব পৌর আওয়ামী লীগের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক কামাল আহমেদের ছোট দুই ভাই ফয়সল আহমেদ ও শাহাদাৎ হোসেন এবং পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক দ্বীন ইসলামকে গত রোববার গভীর রাতে ৮৬ ক্যান বিয়ারসহ আটক করে র্যাব-১৪, ভৈরব ক্যাম্পের সদস্যরা। পরে র্যাব বাদী হয়ে আটককৃতদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ভৈরব থানায় মামলা দায়ের করেন।
মাদকদ্রব্য নিয়ে আটক এবং পরে স্থানীয় ও জাতীয় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এই সংবাদ প্রচারিত হলে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে দ্বীন ইসলামকে সোমবার রাতে এবং কামাল আহমেদকে বুধবার রাতে বহিষ্কার করা হয়।
র্যাবের হাতে আটক কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌর আওয়ামী লীগের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক কামাল আহমেদের ছোট দুই ভাই ফয়সল আলম ও শাহাদাৎ হোসেন এবং ৪ নম্বর ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক দ্বীন ইসলাম। ছবি : এনটিভি
র্যাব-১৪, ভৈরব ক্যাম্প সূত্র জানায়, গোয়েন্দা নজরদারীর মাধ্যমে র্যাবের একটি আভিযানিক দল ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার এডি চন্দন দেবনাথের নেতৃত্বে রোববার দিবাগত রাত ১টার দিকে ভৈরব শহরের কমলপুর (পূর্বপাড়া) এলাকার ফয়সল আলমের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় ৮৬ ক্যান বিয়ারসহ ফয়সল আলম (২৮) ও তাঁর বড় ভাই পরিবহন নেতা শাহাদাৎ হোসেন (৩৭) এবং আমলাপাড়া এলাকার দ্বীন ইসলামকে (২৩) আটক করে। অভিযান চলাকালে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে কমলপুর (পূর্বপাড়া) এলাকার সবুজ মিয়া (২৮) কৌশলে পালিয়ে যায় বলে জানায় র্যাব।
এদিকে ফয়সল ও শাহাদাৎ র্যাবের হাতে আটকের পর স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেন, ভৈরব পৌর আওয়ামী লীগের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক কামাল আহমেদের এই দুই ভাই তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। সংবাদ মাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কামালসহ তাদের অপর ভাইদের বিষয়ে নানা অভিযোগ উত্থাপিত হতে থাকে। এতে করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা চরম বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দুই নেতাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভৈরব পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম বাকী বিল্লাহ জানান, জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশব্যাপী মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান চলমান। ভৈরব আওয়ামী লীগ এর আগে থেকেই স্থানীয়ভাবে মাদক ও সন্ত্রাসবিরোধী সচেতনতামূলক বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলেছে। সেখানে দলের লোকজন এবং তাদের পরিবারের কেউ যদি এমন অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকে, তবে তাকে অবশ্যই দলীয় শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।