গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যা, ডা. আনিসসহ দুজনের বিরুদ্ধে মামলা
প্রাইভেট কার চাপা দিয়ে যুবক হত্যার ঘটনায় চালক সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. আনিসুর রহমানসহ দুজনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা হয়েছে।
নিহত যুবক শাহীন কাদিরের মামা বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
মামলায় ফজলুর রহমান উল্লেখ করেন, গত ৩ জুন সকালে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. আনিসুর রহমান চালক না হয়েও নিজের প্রাইভেট কার চালিয়ে শ্যামনগর অভিমুখে যাচ্ছিলেন। খানপুর এলাকার একটি ফিলিং স্টেশনের কাছে তিনি বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেলে ধাক্কা দিলে আরোহী শাহীন কাদিরসহ দুজন রাস্তায় পড়ে যান। নিমেষেই ডা. আনিস শাহীন কাদিরকে চাপা দিয়ে দ্রুত বেগে পালিয়ে যান। এই ঘটনার পরই শাহীন কাদিরকে শ্যামনগর হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও ডা. আনিস তাঁর চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আত্মগোপন করেন।
মামলায় আরো বলা হয়, পরে শাহীন কাদিরকে সাতক্ষীরা থেকে খুলনা ও পরে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আউসিইউতে ভর্তি করা হয়। তাঁকে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রাখার ১৯ দিন পর গতকাল শুক্রবার বিকেলে মারা যান শাহীন কাদির। তাঁর চিকিৎসায় এ যাবত ১২ লাখ টাকারও বেশি ব্যয় হয়েছে।
মামলায় বলা হয়, শাহীন কাদিরের সঙ্গে একটি বিষয়ে ডা. আনিসের ঝগড়া হয়েছিল। তখন তিনি শাহীনকে দেখে নেবেন বলে হুমকি দেন। এর মাত্র কয়েকদিন পর শাহীন কাদিরকে হত্যার উদ্দেশ্যে ডা. আনিস সম্পূর্ণ সুস্থ মস্তিস্কে গাড়ি চাপা দিয়ে পালিয়ে যান।
এ মামলার অপর আসামি ডা. আনিসের গাড়ি চালনা প্রশিক্ষক মো. সোহরাব মোড়ল। ফজলুর রহমান এই দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মান্নান আলি বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শ্যামনগরের খানপুরে ফিলিং স্টেশনের কাছে একটি ছোট কালভার্টের ওপর ডা. আনিসের প্রাইভেটকার শাহীন কাদিরকে চাপা দেয়। তাঁকে গুরুতর আহত দেখেও ডা. আনিস তখন সরাসরি শ্যামনগরের দিকে পালিয়ে যান। গ্রামবাসী এ সময় তাড়া করেও তাঁকে ধরতে পারেনি।
এমনকি শাহীন কাদিরকে শ্যামনগর হাসপাতালে ভর্তি করলেও ডা. আনিস তাঁর চিকিৎসায় সাহায্য করা, এমনকি তাঁর সামনে আসতেও অস্বীকৃতি জানান বলে তাদের অভিযোগ।
এলাকাবাসী জানায়, ডা. আনিসের মালিকানাধীন সাদা রঙের প্রাইভেটকারটি (ঢাকা মেট্রো -গ- ৩৫-১২১১) তিনি নিজে চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় গাড়িতে থাকা চালক সোহরাব মোড়ল ডা. আনিসকে গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলেন। শেখানোর সময় গাড়ির মধ্যে তাঁরা উচ্চস্বরে হাসিঠাট্টা করছিলেন বলেও তাদের অভিযোগ। তাদের খামখেয়ালির কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে তারা দাবি করেন।