আশুগঞ্জে খাদ্যগুদামে স্থান সংকট, চাল সংগ্রহ বন্ধ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের সরকারি খাদ্যগুদামে চাল রাখার জায়গা নেই। এ কারণে এক সপ্তাহ ধরে বোরো চাল সংগ্রহ অভিযান বন্ধ রয়েছে। গুদামে রাখার জন্য অসংখ্য ট্রাক আট-নয়দিন ধরে গুদাম এলাকায় সারিবদ্ধভাবে অপেক্ষা করছে। গুদামে চাল দিতে না পেরে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন স্থানীয় চাতাল মালিকরা।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দ্রুত সমস্যার সমাধানে গুদাম কর্তৃপক্ষের তেমন কোনো কার্যক্রম লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
আশুগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে এ এলাকায় সরকারিভাবে ৩০ হাজার টন সেদ্ধ ও আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়। সেই লক্ষ্যে গত ১৩ মে থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত ১০ হাজার টন চাল সংগ্রহ করে আশুগঞ্জ খাদ্যগুদাম কর্তৃপক্ষ। সেই চাল গুদামজাত করার পর আর অবশিষ্ট জায়গা না থাকায় গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে নতুন করে চাল সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে না।
চালভর্তি আশুগঞ্জ খাদ্যগুদাম। ছবি : এনটিভি
আশুগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবু কাউসার বলেন, ‘গুদামটির ধারণক্ষমতা দুই হাজার ৫০০ টন। ফলে সরকারিভাবে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা অনুসারে ৩০ হাজার টন চাল এখানে গুদামজাত করা সম্ভব না। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত কোনোভাবে এই সমস্যার সমাধান করতে।’
এদিকে অসংখ্য ট্রাক চাল নিয়ে আট-নয়দিন ধরে গুদাম এলাকায় সারিবদ্ধভাবে অপেক্ষা করছে। দীর্ঘ দিন অপেক্ষার পরও চাল খালাস করতে না পারায় চাতাল মালিক ও ট্রাক শ্রমিকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে অসন্তোষ। তাঁরা বলছেন, দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করা না হলে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে তাঁদের।
চাতাল মালিক কামরুজ্জামান রিপন বলেন, ‘গুদামে জায়গার অভাবে বোরো চাল সংগ্রহ না করার এই প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হলে আশুগঞ্জের চাতাল ব্যবসায়ীরা পথে বসবেন। আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, খুব দ্রুত যেন গুদাম খালি করে নতুন চাল প্রবেশের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।’
আশুগঞ্জ খাদ্যগুদামের সামনে চালভর্তি ট্রাক। ছবি : এনটিভি
চাতাল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজি মো. শাহজাহান সিরাজের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি দ্রুত সরকারি প্রকিউরমেন্ট বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গুদাম খালি করে আমাদের চাল নেওয়া হোক।’
আশুগঞ্জে দ্রুত সরকারিভাবে আরো কিছু চালের গুদাম নির্মাণ করা হোক বলেও দাবি তুলছেন অনেক ব্যাবসায়ী।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা চাতাল মালিক সমিতির সভাপতি জিয়াউল করিম খান সাজু চলমান অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য খাদ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাঁর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
চলমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা খাদ্য কর্মকর্তা সুবীর নাথ চৌধুরী জানান, এ সমস্যা সমাধানে কাজ চলছে। আশা করি পাঁচ-ছয় দিনের মধ্যে আশুগঞ্জ খাদ্য গুদামের চাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন গুদামে পাঠিয়ে সেটা খালি করা সম্ভব হবে। আশুগঞ্জের চাতাল ব্যবসায়ীদের আর কিছু দিন ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানান তিনি।