‘ইয়াবা দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে ধরা’ দুই পুলিশ
মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর থানার দুই পুলিশ সদস্য ইয়াবা দিয়ে এক দিনমজুরকে ফাঁসাতে গিয়ে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়েন। দুই ঘণ্টা এলাকার লোকজন তাঁদের আটকে রাখেন। এরপর থানা থেকে পুলিশ গিয়ে তাঁদের ছাড়িয়ে আনেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সিঙ্গাইর উপজেলার ছোট কালিয়কৈর বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
সিঙ্গাইর থানার ওই দুই পুলিশ সদস্যের নাম উপ-পরিদর্শক (এসআই) মানিক ও কনস্টেবল জাহিদ। তবে এ ব্যাপারে তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সিঙ্গাইর থানার এসআই মানিক ও কনস্টেবল জাহিদ একটি মোটরসাইকেলে করে সন্ধ্যায় বলধরা ইউনিয়নের ছোট কালিয়াকৈর নতুন বাজার এলাকায় আসেন। ওই বাজারের কহিনুর ইসলামের কসমেটিকের দোকানের সামনে থেকে লুঙ্গি পড়া দিনমজুর হাসেম আলীকে ধরে তাঁর পকেটে দুটি ইয়াবা ঢুকিয়ে দেন। এরপর তাঁকে হ্যান্ডকাপ পড়িয়ে দেন ওই দুই পুলিশ সদস্য।
এলাকাবাসী তাৎক্ষণিক এর প্রতিবাদ করে এবং একপর্যায়ে ওই দুই পুলিশ সদস্যকে প্রায় দুই ঘণ্টা ঘেরাও করে রাখে। লোকজন তাঁদেরকে মারধর করতে উদ্যত হলে স্থানীয় বলধরা ইউনিয়নের ওয়ার্ড সদস্য ইদ্রিস আলীসহ কয়েকজন পরিস্থিতি শান্ত করেন।
এ দিকে খবর পয়ে সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন দ্রুত ঘটনাস্থলে যান। এলাকাবাসীর সঙ্গে দুই ঘণ্টা আলোচনার পর তিনি ওই দুই পুলিশ সদস্যকে মুক্ত করে থানায় নিয়ে যান।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, এলাকার কয়েকজন পুলিশের সোর্সও এ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত।
২২ বছর বয়সী দিনমজুর হাসেম আলী জানান, তিনি সন্ধ্যায় ওই বাজারে গিয়েছিলেন ওষুধ কেনার জন্য। ওষুধ কিনে বাড়ি ফেরার পথে বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করছিলেন। এ সময় ওই দুই পুলিশ সদস্য এসে তাঁর লুঙ্গি এবং শার্ট ধরে টানাটানি করেন। এরপর তাঁর পকেটে জোর করে কী যেন ঢুকিয়ে দেন তাঁরা। পুলিশ বলে, পকেটে দুটি ইয়াবা পাওয়া গেছে। তিনি এর প্রতিবাদ করেন। এই ঘটনা দেখে এলাকাবাসীও এর প্রতিবাদ করেন।
সিঙ্গাইর থানার ওসি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই দুই পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে যায় এবং ওই ব্যক্তিকে আটক করে। কিন্তু পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আটক ব্যক্তি একজন ভাল লোক। তথ্যদাতা পুলিশকে তাঁর সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দেওয়ায় এই ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনাটি সম্পর্কে তিনি অবগত আছেন। পুলিশ সদস্য হোক আর পুলিশের সোর্সই হোক, নিরীহ লোককে যে হয়রানি করবে তাঁকে শাস্তি পেতে হবে।