তিন জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ৩
সাতক্ষীরা, বরগুনা ও কুমিল্লায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে তিনজন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে চোর, জলদস্যু ও মাদক ব্যবসায়ী আছেন বলে জানা গেছে। গতকাল শুক্রবার রাত ও আজ শনিবার ভোরে এসব বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এনটিভি অনলাইনের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :
সুভাষ চৌধুরী, সাতক্ষীরা : শ্যামনগর উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে রেজাউল ইসলাম (৪২) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। রাতে শ্যামনগরের খানপুর বাজারের পাশে এ ঘটনা ঘটে। আগের দিন নিহত রেজাউলকে ঢাকার মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ।
পুলিশ বলছে, নিহত রেজাউল মোটরসাইকেল চোরচক্রের হোতা ছিলেন। তিনি শ্যামনগরের বাদোঘাটা গ্রামের বাসিন্দা। ‘বন্দুকযুদ্ধের’ সময় পুলিশের তিন কনস্টেবল আহত হন। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ারশ্যুটার গান ও কিছু গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
জেলা পুলিশের তথ্য কর্মকর্তা ও বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক আজম খান জানান, মোটরসাইকেল চোর চক্রের হোতা রেজাউলকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পল্লবী থানা গত বৃহস্পতিবার একটি গোপন আস্তানা থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে শ্যামনগর থানা পুলিশ তাঁকে শুক্রবার সকালে সাতক্ষীরায় নিয়ে আসে। তাঁর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী চোরচক্রের আরো তিন সদস্য শামীম, শাহজাহান ও সাহিদুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় একটি চোরাই মোটরসাইকেলও জব্দ করা হয়।
বিশেষ শাখার পরিদর্শক আজম খান আরো জানান, শুক্রবার রাতে রেজাউলকে নিয়ে খানপুর এলাকায় আরো মোটরসাইকেল উদ্ধার করতে গেলে সেখানে ওত পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা তাঁকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে তারা গুলি ছুড়লে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ হন রেজাউল। তাঁকে দ্রুত শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান, রেজাউলের বিরুদ্ধে ১২টার বেশি মোটরসাইকেল চুরির মামলা রয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সোহেল হাফিজ, বরগুনা : পাথরঘাটা উপজেলায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে সন্দেহভাজন এক জলদস্যু নিহত হয়েছেন। ভোরে পাথরঘাটার সুন্দরবন সংলগ্ন বলেশ্বর নদীর মাঝেরচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম কাজল। তবে, তাঁর সম্পর্কে এর বেশি কিছু জানা যায়নি। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে তিনটি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারের কথা জানানো হয়েছে।
বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বলেশ্বর নদীর সুন্দরবন সংলগ্ন মাঝেরচর এলাকায় জলদস্যুদের অবস্থানের খবর পেয়ে অভিযান চালায় র্যাব-৮। এ সময় র্যাবকে লক্ষ করে গুলি ছোড়ে জলদস্যু জাহাঙ্গীর বাহিনীর সদস্যরা। আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালান র্যাব সদস্যরাও। দুই পক্ষের গোলাগুলির একপর্যায়ে জলদস্যুরা পিছু হটে। ঘটনাস্থলে তল্লাশি করে জলদস্যু জাহাঙ্গীর বাহিনীর সদস্য কাজলের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার করে র্যাব। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে তিনটি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা মো. খবীর বলেন, জলদস্যু কাজলের মৃতদেহ পাথরঘাটা থানায় হস্তান্তর করবে র্যাব।
মো. জালাল উদ্দিন, কুমিল্লা : কুমিল্লার কাপ্তানবাজার গোমতি বেড়িবাঁধ এলাকায় র্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে সন্দেহভাজন এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। তাঁর নাম সহিদুল ইসলাম সবু (৪৪)। ভোর ৪টার দিকে জেলার সদর উপজেলার কাপ্তানবাজার গোমতি বেড়িবাঁধ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে মাদকদ্রব্য উদ্ধারের কথা জানিয়েছে র্যাব।
অভিযানে অংশ নেওয়া র্যাব ১১-এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর আতাউর রহমান জানান, কুমিল্লার মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকায় নাম থাকা সবুকে আটকের জন্য র্যাব অভিযান চালায় কাপ্তানবাজার গোমতি নদীর বেড়িবাঁধ এলাকায়। মাদক কারবারীরা র্যাব সদস্যের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি ও ইটপাথর নিক্ষেপ করতে থাকে। একপর্যায়ে র্যাবও আত্মরক্ষায় ১০টি গুলি চালায়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সহিদুল ইসলাম সবুকে আটক করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
র্যাব জানায়, নিহত সহিদুল ইসলাম সবু সদর দক্ষিণ উপজেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী একবালিয়া গ্রামের বাসিন্দা। ঘটনাস্থল থেকে ফেনসিডিল ও গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহত সবুর মরদেহ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।