তিন সিটিতে অঘোষিত সান্ধ্য আইন : রিজভী
আগামী ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য তিন সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে যেন অঘোষিত সান্ধ্য আইন জারি করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দল পুলিশের সহায়তায় ভোটারশূন্য পরিস্থিতি তৈরি করতে নানা ফন্দি এঁটে চলেছে। তিন সিটি করপোরেশনেই ভোটাররা অন্ধকার পরিবেশের মধ্যে সময় পার করছে।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতাকর্মী এবং সমর্থকদের মনে ভয় ও আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে, যাতে বিএনপি সমর্থকরা ভোট দান থেকে বিরত থাকে। পুলিশী হয়রানি এমন পর্যায়ে উত্তীর্ণ করা হয়েছে যে, ছেলেকে না পেয়ে পিতাকে আবার পিতাকে না পেয়ে ছেলেকেও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এমনকি মহিলাদেরকেও এই হয়রানি থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে না।
রিজভী অভিযোগ করেন, ভোটের দিন মহিলারা যাতে নির্বাচনে পোলিং এজেন্ট হিসেবে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হতে না পারেন সেজন্য তাঁদেরকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। যে এলাকাগুলোতে বিএনপির ভোট বেশি সেই সব এলাকায় উদ্দেশ্যমূলকভাবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নিজেদের অফিসে আগুন দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর দায় চাপাচ্ছে।
সাবেক এ ছাত্রনেতা অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির নির্বাচনী প্রচারণায় ম্যাজিস্ট্রেট নিজে উপস্থিত হয়ে প্রচারণা বন্ধ করে দিয়েছেন, কিন্তু প্রশাসনের ছত্রছায়ায় পুলিশী পাহারায় আওয়ামী লীগের প্রচারণা চলছে দেদারসে। ঘণ্টা দুয়েক আগে বিএনপির প্রচার মিছিলে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে।
রিজভীর অভিযোগ, পুলিশী অভিযানের কারণে রাজশাহী মহানগরে এক ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পুলিশী দৌরাত্ম্যে রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থীর সব নির্বাচনী অফিস বন্ধ। সিলেট সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোটারদের মনে ভীতি সৃষ্টির জন্য আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা নিজেরাই বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এর দায় চাপাচ্ছে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর।
রিজভী আরো বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের নিয়ে সিটি করপোরেশন এলাকায় সাধারণ ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সব আইনি বাধ্যবাধকতাকে অতিক্রম করে এক বেপরোয়া দুঃশাসন চালু করার জন্য নির্বাচন, ভোট, মানুষের ভোটাধিকারকে বিসর্জন দিয়েছে। ভোট কারচুপি আর ভোট সন্ত্রাসকে আওয়ামী নির্বাচনের উপজীব্য করা হয়েছে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকার ভোট ও নির্বাচনের মুখোশ পরে মূলত একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে ৭৫-এর মৃত বাকশালকেই প্রতিষ্ঠা করছে। এখন সেই একদলীয় বাকশাল ব্যবস্থাকে গণতন্ত্রের একটি লেবাস পরিয়ে বাস্তবায়ন করছে। আর সেই কারণেই আগামী ৩০ জুলাইয়ের সিটি নির্বাচন একতরফা করতে বাকশালী পুলিশ রক্ষী বাহিনীর দায়িত্ব পালন করছে। যতদিন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে ততদিনই গণতন্ত্রের জন্য বিপদ। আমি দলের পক্ষ থেকে বিএনপির গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও তাদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি করছি।