বরিশালে এবার সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন মনীষা
ভোট গ্রহণ শেষের ঠিক আধা ঘণ্টা আগে অনিয়ম, কারচুপিসহ নানা অভিযোগে এনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন বাসদের মেয়র প্রার্থী (মই মার্কা) ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তী।
আজ সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার বরিশাল নগরের ফকিরবাড়ি রোডে বাসদের দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন মনীষা।
সকাল ৮টা থেকে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়। ভোট গ্রহণ চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
সংবাদ সম্মেলনে মনীষা জানান, তিনি নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম, কারচুপি, কেন্দ্র দখল, ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসের কারণে সরে দাঁড়িয়েছেন। এর আগে মনীষা জাল ভোট দেওয়ার প্রতিবাদ করতে গেলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হাতে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত হন। তিনি অভিযোগ করেন, এই সময় তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। তাঁর একটি হাত ভেঙে গেছে বলেও অভিযোগ করেন বাসদের এই প্রার্থী।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সরকারি মহাবিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে তাঁর ওপর এই হামলা চালনো হয়। ওই সময় মনীষা অভিযোগ করেন, সরকারি মহাবিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে তিনি দেখতে পান, সেখানে নৌকা মার্কার পক্ষে জাল ভোট দেওয়া হচ্ছে। নৌকা মার্কায় আগে থেকে সিলমারা ব্যালট পেপার দেখতে পান তিনি। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি এর প্রতিবাদ করেন। এ সময় আওয়ামী লীগের পোলিং এজেন্টরা তাঁর ওপর চড়াও হয়। তাঁকে মারধর করে মেঝেয় ফেলে দেয় তারা। এ ঘটনায় মনীষার বাঁ হাতে আঘাত লাগে। হাতে ব্যান্ডেজ করা হয়েছে।
হামলার ঘটনায় বরিশাল সিটি নির্বাচন স্থগিত করার দাবি জানান বাসদের মেয়র প্রার্থী মনীষা।
এর আগে ভোট গ্রহণ শুরুর চার ঘণ্টার মাথায় নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার। সকালে ভোট দেওয়ার পরই গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপে এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন বিএনপির এই প্রার্থী।
পরে দুপুর ১২টায় বরিশাল প্রেসক্লাবের এসে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী। এ সময় তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে ৭০-৮০টি কেন্দ্রে আমাদের এজেন্টদের ঢুকতে দেয়নি। অন্য যেসব কেন্দ্রে পোলিং এজেন্টরা প্রবেশ করেছে, সেখানে সবাই মিলে সিল করেছে, নৌকার মার্কার সিল করেছে। এসব কারণেই নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিচ্ছি।’
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, বরিশাল সিটি করপোরেশনে দুই লাখ ৪২ হাজার ৬৬৬ জন ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ২১ হাজার ৪৩৬ ও নারী ভোটার এক লাখ ২০ হাজার ৭৩০ জন।
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ছয়জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ (নৌকা), বিএনপির মো. মজিবর রহমান সরোয়ার (ধানের শীষ), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ওবায়দুর রহমান মাহবুব (হাতপাখা), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির আবুল কালাম আজাদ (কাস্তে), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের মনীষা চক্রবর্ত্তী (মই) ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. ইকবাল হোসেন (লাঙ্গল)।
বরিশাল সিটিতে ৩০টি সাধারণ ও ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড রয়েছে। এখানে ১২৩টি ভোটকেন্দ্র ও ৭৫০টি ভোটকক্ষ রয়েছে।