ভিড় রেলস্টেশনে, ফাঁকা বাস কাউন্টার
ঈদুল আজহাকে ঘিরে এখনই শুরু হয়ে গেছে মানুষের ঘরে ফেরার প্রস্তুতি। তাই এখনই অগ্রিম টিকেট পেতে যাত্রীরা ভিড় জমাচ্ছেন রেলস্টেশনের টিকেট কাউন্টারগুলোতে।
এদিকে, এখনো কোনো অগ্রিম টিকেটপ্রত্যাশীকে দেখা যাচ্ছে না বাস কাউন্টারগুলোতে।
ফলে একদিকে টিকেট থাকা সত্ত্বেও যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না বাসগুলোতে, অন্যদিকে রেলস্টেশনে তৈরি হচ্ছে টিকেটপ্রত্যাশীদের বাড়তি চাপ।
আজ শুক্রবার রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, আগামী ১৯ আগস্টের অগ্রিম টিকেট পাওয়ার জন্য ভিড় জমিয়েছেন যাত্রীরা। ২০ আগস্টের টিকেট বিক্রি হবে আগামীকাল। তবে সেই টিকেট পেতেও আজ লাইনে দাঁড়িয়েছেন অনেকেই। ফলে অগ্রিম টিকেট বিক্রির আজ তৃতীয় দিনে টিকেটপ্রত্যাশীদের লাইন কাউন্টার থেকে ছাড়িয়ে গেছে সড়ক পর্যন্ত।
জানা যায়, আজ সকাল ৮টা থেকে টিকেট বিক্রি শুরু হয়। কিন্তু টিকেট পেতে গতকাল থেকেই জড়ো হতে শুরু করেন টিকেট প্ত্যাশীরা। দেখা যায়, এক দিন, এক রাত দাঁড়িয়ে থেকেও লাইনের শেষ যাত্রীটি অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। অধৈর্য হয়ে পড়তে দেখা যায় অনেক মানুষকে।
অনেক যাত্রী জানান কাউন্টার স্বল্পতার কথা। দেখা যায়, প্রতিবছরের মতো এবারও নারী টিকেটপ্রত্যাশীদের জন্য আলাদা কাউন্টার বসানো হয়েছে। তবে একটি কাউন্টার যথেষ্ট নয় বলে অভিযোগ নারীদের।
এক নারী (২৫) বলেন, ‘কালকেও ঘুরে গেছি। আজকেও মনে হয় না পাব।’
তাঁর পাশে দাঁড়ানো আরো নারী (২৫) যাত্রী বলেন, ‘দুইটা কাউন্টারের জায়গায় একটা কাউন্টার থেকে টিকেট দিচ্ছে। ছেলেদের কেন দুইটা কাউন্টার দেবে?’
একই লাইনে দাঁড়ানো এক তরুণী (২২) বলেন, ‘কালকে সন্ধ্যা থেকে এইখানে আছি। আর এখন কয়টা বাজে?’
অসহ্য গরমে অতিষ্ঠ হওয়ার ক্ষোভ শোনা গেল আরেক যাত্রীর (৪০) কাছে। তিনি বলছিলেন, ‘ফ্যান নাই, গরমে এতক্ষণ কীভাবে থাকে মানুষ?’
পুরুষদের লাইনে দাঁড়ানো এক ব্যক্তি বলেন, ‘কালকে সারাটা দিন, সারাটা রাত জাগার পর প্রথম সিরিয়ালটা যাতে পাই এ জন্য লাইনে দাঁড়ানো। শেষজন হিসেবে লাইনে দাঁড়াইছি। ১৯ তারিখের টিকেট কাটব। পাব কি না জানি না।’
তবে রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, সীমিত সম্পদ দিয়ে যাত্রীদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছেন তাঁরা।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক সীতাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘২৬ হাজার ৮৯৫টি টিকেট ইস্যু করছি আজকে।’
এদিকে, বাস কাউন্টারগুলোতে দেখা মেলেনি কোনো আগাম টিকেটপ্রত্যাশীদের।
অগ্রিম টিকেট পেতে বাস কাউন্টারগুলোতে আজ শুক্রবারও কোনো ভিড় দেখা যায়নি। ফলে বাস কাউন্টারগুলো ছিল প্রায় ফাঁকা। ছবি : এনটিভি
ফাঁকা কাউন্টারে বসা এক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, ‘যাত্রী যারাই আসতেছে, আইসা বলে ভাই, ১৯ তারিখ বা ২০ তারিখ। কেউ ভুল করেও বলে না, ভাই ১৮ তারিখের একটা সিট আছে? বা ১৭ তারিখের একটা সিট আছে? আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ টিকেট আছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙামাটি, বান্দরবান সব রুটের টিকেট আছে। কিন্তু সে রকম যাত্রী চাপ পাচ্ছি না।’
তবে এবার ঈদে সড়ক পরিস্থিতি ভালো থাকলে যাত্রীরা নির্বিঘ্নে তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে বলে প্রত্যাশা পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের।