‘ওভারলোডে’ সার্ভারে ত্রুটি, ট্রেনের টিকেট বিক্রি বন্ধ
‘ওভারলোডের কারণে’ সার্ভারে ত্রুটির কারণে রাজধানীর কমলাপুর ও চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে আপাতত ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি বন্ধ রয়েছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দীর্ঘ সময় ধরে লাইনে অপেক্ষায় থাকা হাজার হাজার যাত্রী।
আজ শনিবার সকাল ৮টা থেকে চতুর্থ দিনের মতো ঈদুল আজহা উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হয়। আড়াই ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে ১০টায় সার্ভারে ত্রুটি দেখা দিলে টিকেট বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়।
টিকেট বিক্রি ফের কখন শুরু হবে তা সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারছে না রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
তবে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সার্ভার একেবারে বিকল হয়ে গেছে এটা বলা যাবে না। থেমে থেমে ডাউন হয়ে যাচ্ছে। সারা দেশে একসঙ্গে টিকেট কাটা শুরু হয়েছে। যে কারণে সার্ভার ডাউন হয়ে যাচ্ছে। পুরোপুরি ফেইলিউর না, থেমে থেমে ঘটনাটা ঘটছে। এটা মেরামতের জন্য ঢাকায় কাজ করা হচ্ছে। যেহেতু এটা সেন্ট্রালি কন্ট্রোল করা হচ্ছে।’
‘গতকাল অনলাইনে তার কেটে দেওয়ায় ত্রুটি দেখা দিয়েছিল। আজ ওভারলোডের কারণে এটা হয়েছে। এটা যাতে ভবিষ্যতে না হয় সেটার চেষ্টা করা হচ্ছে’, যোগ করেন ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ।
গতকাল শুক্রবারও সকাল থেকে বন্দরনগরীর স্টেশন সার্ভারে ত্রুটি দেখা দিলে তৃতীয় দিনের টিকেট বিক্রিতে বিপত্তি দেখা দেয়। সেদিন প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা পর ট্রেনের টিকেট বিক্রি শুরু হয়।
এ দিকে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের যাত্রীরা বলছে, আজ সকাল থেকেই এ ধরনের একটি সমস্যা চলে আসছিল। যার ফলে টিকেট দিতে সময় লাগছিল বেশ। টিকেট বিক্রির গতি ছিল শ্লথ। একজনের টিকেট কাটতে পাঁচ থেকে দশ মিনিট পর্যন্ত সময় লাগছিল। এর ফলে বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে যাত্রীদের। বিশেষ করে ৭, ৮, ৯, ১০ নম্বর কাউন্টারগুলোতে বেশি সময় লাগছিল বলে জানায় তারা।
সকালে কমলাপুর স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, অন্য যেকোনো দিনের চেয়ে আজ ভিড় বেশি। কারণ, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ঈদ যদি ২২ আগস্ট হয়, তাহলে তার দুদিন আগের অর্থাৎ ২০ আগস্টের টিকিট বিক্রি হচ্ছে আজ। সকাল ৮টা থেকে টিকেট বিক্রি শুরু হয়।
যাত্রীরা টিকেট প্রাপ্তি নিয়ে কিছু অভিযোগও করেছেন। বিশেষ করে এসি টিকেট পাওয়ার ক্ষেত্রে। তাদের অভিযোগ, সামনে থাকা কয়েকজন যাত্রী এসি টিকেট পাওয়ার পরই রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায় যে, এসি টিকেট আর নেই।
আজ টিকেট কাউন্টার তথা মূল স্টেশন চত্বর ছাপিয়ে মানুষ দীর্ঘ লাইন দিয়েছে পাশের সড়ক পর্যন্ত। যদিও সবাই টিকেট শেষ পর্যন্ত পাবে কি না, তাও জানে না। তবু ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে রোদ আর গরমের মধ্যে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে।
এরই মধ্যে সার্ভার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ লক্ষ্য করা গেছে। তাঁরা স্টেশন কর্তৃপক্ষের কাছে, কখন ফের টিকেট বিক্রি শুরু হবে সেটা জানতে চাচ্ছেন। স্টেশনে মাইকে যাত্রীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
এ দিকে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখানে সর্বমোট টিকেটের পরিমাণ হলো আট হাজার ৮১৩টি। তার মধ্যে ২৫ ভাগ টিকেট অনলাইনে আছে। পাঁচ ভাগ টিকেট ভিআইপিদের জন্য। পাঁচ ভাগ রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য। অবশিষ্ট ছয় হাজার ৮৪৫টি টিকেট ১০টি কাউন্টারের মাধ্যমে বিক্রি করা হবে।
এবার ঢাকা স্টেশনে ২৬টি কাউন্টার খোলা রাখা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি কাউন্টার নারীদের জন্য সংরক্ষিত রয়েছে। ফিরতি টিকেট বিক্রি শুরু হবে ১৫ আগস্ট থেকে।
ঈদ উপলক্ষে ৯ জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার ঈদ উপলক্ষে বাসের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হয়।