যমুনা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে
সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে যমুনা নদী থেকে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
এ কারণে সরকার হারাচ্ছে মোটা অঙ্কের রাজস্ব আর প্রভাবশালী বালুদস্যু চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসনের কতিপয় কর্তাব্যক্তি নিয়মিত সুবিধা নেওয়ায় বালু তোলা ও বিক্রি বন্ধ হচ্ছে না। গত শুক্রবার যমুনা নদীর এনায়েতপুরে দুই ব্যবসায়ীকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সরেজমিনে এলাকা ঘুরে জানা যায়, যমুনা নদীবেষ্টিত চৌহালী উপজেলায় কোথাও সরকার অনুমোদিত কোনো বালুমহল ও বালু উত্তোলনে প্রশাসনের অনুমতি নেই। তারপরও স্থানীয় প্রভাবশালী বালুদস্যুরা দীর্ঘদিন ধরে যমুনা নদীর সদিয়া চাঁদপুর, স্থল ইউনিয়ন ও যমুনার পূর্বপাড়ে বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে বিশাল আকৃতির আট-নয়টি বালু উত্তোলনের মেশিন ও ড্রেজার দিয়ে প্রতিদিন দেড় লক্ষাধিক ঘন ফুট বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এ ছাড়া ইঞ্জিনচালিত নৌকার সাহায্যে চরের নিচু জমি থেকে দেশি পদ্ধতিতে বালু তুলে এনায়েতপুর বাঁধ ও চৌহালীর বিভিন্ন জায়গায় গড়েছে বালুর স্তূপ। সেখান থেকে ট্রাক ও ট্রলিতে এলাকাসহ পাশের উপজেলার বিভিন্ন বাসাবাড়িতে নির্মাণকাজ ও খাল ভরাটের কাজ চলছে।
এদিকে, বালু উত্তোলনকারী এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘যাঁদের অবগত করা দরকার, তাঁরা সবাই অবগত আছেন। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেই বালু তুলি। এ বিষয়ে কিছু লিখে কারো লাভ হবে না, আমাদের সাময়িক কিছু ক্ষতি হবে।’
এভাবে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে গত তিন মাসে এনায়েতপুরের ব্রাহ্মণগ্রাম, আড়কান্দি ও চৌহালীর বিভিন্ন স্থানে তীব্র নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীভাঙনে দুই হাজার বসতভিটা ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। হুমকির মুখে পড়েছে দেশের সর্ববৃহৎ কাপড়ের হাট, খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, চারটি গ্রামের শত শত ঘরবাড়ি ও তাঁত কারখানা। এ অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে তাঁরা ঊর্ধ্বতন মহলের কার্যকর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে গত শুক্রবার দুপুরে চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আনিছুর রহমান এনায়েতপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত দুই ব্যবসায়ীকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন।