জাবালে নূরের চালকের স্বীকারোক্তি, বাকি তিন কারাগারে
রাজধানীতে দুই কলেজ শিক্ষার্থীর নিহত হওয়ার ঘটনায় জাবালে নূর পরিবহনের বাসচালক জুবায়ের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
আজ সোমবার ঢাকার মহানগর হাকিম গোলাম নবীর আদালতে চালক জুবায়ের এ স্বীকারোক্তি দেন।
ঢাকার অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপকমিশনার আনিসুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আজ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক কাজী শরিফুল ইসলাম আসামি জুবায়েরকে হাজির করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। সে আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকার মহানগর হাকিম গোলাম নবীর আদালতে জোবায়ের এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।’
আনিসুর রহমান আরো জানান, এ ছাড়া জাবালে নূর পরিবহনের আরেক বাসচালক সোহাগ আলী এবং হেলপার এনায়েত হোসেন ও রিপনকে আজ একই তদন্ত কর্মকর্তা কারাগারে পাঠানোর আবেদন করলে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম কেশব রায় চৌধুরী কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে গত ৬ আগস্ট দুই বাসের চালক ও তাঁদের সহকারীসহ (হেলপার) চারজনকে রিমান্ডে দেন ঢাকার সিএমএম আদালত।
শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় জাবালে নূর পরিবহনের মালিক শাহাদাত হোসেন ও একই পরিবহনের ‘মূল হোতা’ চালক মাসুম বিল্লাহ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁরা বর্তমানে কারাগারে আটক রয়েছেন।
এ ঘটনায় জাবালে নূর পরিবহনের দুটি বাসের নিবন্ধন ও ফিটনেস সনদ বাতিল করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।
গত ২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর কুর্মিটোলায় বিমানবন্দর সড়কে বাসের চাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, জাবালে নূর পরিবহনের দুটি বাস প্রতিযোগিতা করে মিরপুর থেকে রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে আসছিল। এ সময় ফ্লাইওভারের শেষ দিকে, রাস্তার পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল একদল শিক্ষার্থী। এর মধ্যে একটি বাস ফ্লাইওভার থেকে নেমেই দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। এ ছাড়া আহত হয় বেশ কয়েকজন।
নিহতরা হলো শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজীব।
ওই ঘটনার পর থেকেই বিমানবন্দর সড়কসহ বিভিন্ন এলাকায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। ২৯ জুলাই থেকে টানা বিক্ষোভে রাজধানী ঢাকা প্রায় অচল হয়ে যায়। তবে বর্তমানে ঢাকায় স্বাভাবিক ভাবেই পরিবহন চলছে।
এ ঘটনায় নিহত দিয়া খানম মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন।