নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা ৭৫টি দলকে অযোগ্য ঘোষণার পর বাংলাদেশ জাসদ নামের একটি দল আবেদন পুনর্বিবেচনার চিঠি দেয় নির্বাচন কমিশনে (ইসি)। তাদের  আবেদন আমলে নিয়ে মাঠ পর্যায়ে তদন্ত করছে ইসি।

নির্বাচন কমিশনের যাচাই-বাছাই কমিটির প্রধান ও অতিরিক্ত সচিব মো. মোখলেসুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে আবেদন করা সব দলের নিবন্ধন আবেদন বাতিল ঘোষণা করার পর বাংলাদেশ জাসদ পুনর্বিবেচনার আবেদন করে ইসিতে। আমরা সেটা আমলে নিয়েছি। মাঠপর্যায়ে তদন্ত চলছে। মাঠের তথ্য তাদের পক্ষে গেলে তারা নিবন্ধন পাবে, নতুবা পাবে না।’

এই বিষয়ে ইসির উপসচিব আব্দুল হালিম খান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘প্রথমে যে ৭৫টি নতুন রাজনৈতিক দল আবেদন করেছিল তাদের ভেতরেই নাম ছিল বাংলাদেশ জাসদের। তবে আবেদন করার সময় তাদের শর্ত ছিল যে দলে দুজন এমপি থাকায় মাঠপর্যায়ের তদন্ত ছাড়াই তাদের নিবন্ধন দিতে হবে। এটার সাথে একমত পোষণ না করে যাচাই-বাছাই কমিটি তাদের আবেদন বাতিল বলে ঘোষণা করে সে সময়।’

উপসচিব আরো বলেন, এরপরে তারা আবার পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছেন। গত ৭ আগস্ট আমাদের যাচাই-বাছাই কমিটির কর্মকর্তারা জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে তদন্তে নেমেছে। তদন্ত রিপোর্ট ভালো এলে তারা নিবন্ধন পাবে। ভালো না এলে পাবে না।

আব্দুল হালিম খান আরো বলেন, হাতি অথবা আনারস প্রতীক চেয়ে আবেদন করেছে তারা। আগামী ১০ দিনের ভেতরে যাচাই-বাছাই কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছে ইসি। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু নেতৃত্বাধীন জাসদে ভাঙনের পর আলাদাভাবে সক্রিয় রয়েছে জাসদের অন্য অংশটি। শরীফ নুরুল আম্বিয়া ও নাজমুল হক প্রধান নেতৃত্বাধীন এই অংশ বাংলাদেশ জাসদ নামে নিবন্ধন চাইছে।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, প্রথমে যখন আবেদন করেছিলাম তখন নির্বাচন কমিশন আমাদের বলেছিল এমপি থাকলে আমরা নিবন্ধন পাচ্ছি না। এরপরে আমরা পুনর্বিবেচনার আবেদন করলে গত সপ্তাহে নিবন্ধন আবেদন আমলে নিয়ে তদন্ত করা শুরু হয়েছে বলে একটি চিঠি দিয়েছে ইসি। একটি দলের নিবন্ধন পেতে যা যা লাগে সব কিছুই আমাদের আছে। এর পরও যদি নিবন্ধন না পাই তবে আমরা আদালতের আশ্রয় নেব।

যাচাই-বাছাই কমিটি সূত্রে জানা গেছে, মোট ৭৫টি নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছিল। প্রাথমিক তদন্ত শেষে ১৯টি নতুন দলের নিবন্ধনের আবেদন বাতিল করেছিল ইসি। বাকি ৫৬টি দলের কাছে ইসি চিঠি দেয়। সেই ৫৬টি দলের মধ্য ৪৭টি দল ইসির চিঠির প্রত্যুত্তর দেয়। বাকি ৯টি দল ইসির চিঠির প্রত্যুত্তর না দেওয়ায় ৯টি দল নিবন্ধনের অযোগ্য হিসেবে ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তৃতীয় ধাপে মাত্র দুটি দলকে রেখে বাকি ৪৫টি দলের আবেদন বাতিল ঘোষণা করে। ফলে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা মোট ৭৫টি দলের মধ্যে ৭৩টি দলকেই নিবন্ধনের অযোগ্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। বাকি দুটি দলের মাঠ পর্যায়ের তদন্ত শেষে যাচাই-বাছাই কমিটি ওই দুটি দলকেও নিবন্ধনের অযোগ্য হিসেবে ঘোষণা করে।

সূত্রে আরো জানায়, নতুন দল হিসেবে আবেদন করা মোট ৭৫টি দলের মধ্য অধিকাংশ দলই ভুল তথ্য দিয়ে আবেদন করে। নিয়ম মেনে ‘ট্রেজারি চালান’ জমা দেয়নি অনেক দল। অধিকাংশেরই ১০০ উপজেলায় নিজস্ব অফিস নেই।