ঈদযাত্রায় রেলে স্বস্তি, ভোগান্তি যত সড়কে
ট্রেন মোটামুটি নির্বিঘ্নে ছাড়লেও স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে যাঁরা সড়কপথে বাসে যাচ্ছেন, তাঁরা পড়ছেন ভোগান্তিতে। মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের কারণে সঠিক সময়ে ঢাকা থেকে বাস ছেড়ে যেতে পারছে না। অনেকের শঙ্কা, আগামী কয়েক দিনে এ ভোগান্তি আরো বাড়তে পারে।
মহাসড়কে গাড়ির বাড়তি চাপের কারণে সময়মতো বাসগুলো ঢাকায় আসতে পারছে না। তাই ঈদ উপলক্ষে সড়কপথের যাত্রীরা বাসের আশায় টার্মিনালগুলোতে বসে আছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। প্রায় প্রতি ঈদে এমন ভোগান্তির মধ্য দিয়ে যেতে হলেও অপেক্ষমাণ যাত্রীদের ক্ষোভ যেন কমছে না।
রাজধানীর একটি বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষমাণ এক যুবক (২৫) বলেন, ‘আমার বাসের টিকেট ১১টা ৫০ মিনিটের। এখন যা বলছে, তা হলো গাড়ি আড়াইটায়ও আসতে পারে, ৩টায়ও আসতে পারে। নির্দিষ্ট করে তাঁরা বলতে পারছেন না, বাসটি এখন কোথায়?’
রাজধানীর সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও বাস না পেয়ে হতাশ এক যাত্রী বলেন, ‘আমি কুমিল্লার যাত্রী। সবাই জানে, কুমিল্লায় যেতে দুই ঘণ্টা লাগে। কিন্তু এমনও দেখা গেছে, কেউ সকালে রওনা দিয়ে রাতে গিয়ে পৌঁছেছে। কিংবা সন্ধ্যা লেগে যায়।’
তবে তুলনামূলক ট্রেনযাত্রীরা এখন পর্যন্ত স্বস্তিতে রয়েছেন। ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে সকালে বড় কোনো শিডিউল বিপর্যয় ছাড়াই ট্রেনগুলো ছেড়ে গেছে। একরকম যুদ্ধ করে পেতে হয় ট্রেনের টিকেট। আবার ট্রেনে ওঠাও আরেক যুদ্ধ, তাই ভিড় এড়াতে অনেকে আগেভাগে বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ট্রেনে উঠতে পেরে খুশি এক যাত্রী (৩২) বলেন, ‘ঈদের অগ্রিম টিকেট যখন কাটি, তখন রাতে এসে স্টেশনে থাকতে হয়েছে। অনেক কষ্ট করে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট কাটছি।’
আরেক যাত্রী বলেন, ‘আমি জয়দেবপুর থেকে টিকেট কেটেছি। সকালে জয়দেবপুর থেকে কমলাপুর এসেছি। এখন ট্রেনে নাটোর যাব।’
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, আগামী রোববার থেকে ঈদযাত্রার মূল স্রোত শুরু হবে। যাঁরা গত ৭ আগস্টে টিকেট কিনেছিলেন, তাঁরা আজ প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে সকাল থেকেই বিভিন্ন ট্রেনে যাত্রা শুরু করেছেন।
সকালে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, রাজশাহীগামী আন্তনগর ধূমকেতু, খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস, সিলেটের পারাবাত, চট্টগ্রামগামী সোনার বাংলা, দেয়ানগঞ্জগামী তিস্তা এক্সপ্রেস যথাসময়ে কমলাপুর ছেড়েছে।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, এবারে ট্রেনের তেমন বড় ধরনের শিডিউল বিপর্যয় হবে না। তবে ট্রেনের ছাদে বা ঝুঁকিপূর্ণ ট্রেন ভ্রমণ রোধ করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে।