মানুষের প্রতিযোগিতায় প্রাণ হারাল ২১ গরু
একটু আগে-পরে আসছিলো দুটি লঞ্চ। পাড়ে দাঁড়িয়ে আছে অনেক মানুষ। আর কয়েকদিন পরেই তো ঈদ। একটু আগে পৌঁছালেই বেশি যাত্রী আর বেশি টাকা। মানুষের এই টাকার প্রতিযোগিতা আর লোভের বলি হতে হলো অবলা ২১ গরুকে।
আজ রোববার বুড়িগঙ্গায় ভেসে ওঠে ২১টি মৃত গরু। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ৩১টি গরু নিয়ে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বুড়িগঙ্গা নদীতে ডুবে যায় একটি ট্রলার। আজ ট্রলারসহ গরুগুলো ভেসে ওঠে। তবে, এখনো নিখোঁজ রয়েছে আরো পাঁচটি গরু।
অপরদিকে, ট্রলারডুবির পর নিখোঁজ তিন রাখাল গতকাল রাতেই সাঁতরে নদীর অপর পাড়ে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মঞ্জুর কাদের জানান, গরুসহ ডুবে যাওয়া ট্রলারটি ঘটনাস্থল থেকে কয়েক শ গজ দূরে রোববার দুপুরে ভেসে উঠলে পুলিশ তা উদ্ধার করে তীরে নিয়ে আসে। ভেসে উঠা ট্রলারে ২১টি মৃত গরু বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়।
গরুর ব্যাপারিদের দাবি, আরো পাঁচটি গরু নিখোঁজ রয়েছে। তাদের দাবি, এই গরুর মূল্য প্রায় ৩০ লাখ টাকা। লঞ্চ মালিকের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন তাঁরা।
ওসি মঞ্জুর কাদের আরো জানান, বুড়িগঙ্গার জলসীমা কেরানীগঞ্জ থানার আওতাধীন হওয়ায় এই ঘটনার মামলাটিও কেরানীগঞ্জ থানায় দায়ের করা হয়েছে।
গতকাল সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল থেকে আসা ৩১টি গরুবোঝাই একটি ট্রলার ফতুল্লার কোরবানির পশুর হাটে তোলার জন্য ঘাটে ভিড়ছিল। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা পটুয়াখালীগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ এম ভি ধুলিয়া-১ ফতুল্লার টার্মিনালে ভিড়তে থাকে। এদিকে, আগে থেকেই টার্মিনালের দিকে যাচ্ছিল লঞ্চ এমভি আওলাদ-৭। এ সময় দুইটি লঞ্চই আগে যাওয়ার চেষ্টা করতে থাকে। গরুবাহী ট্রলারটিকে ধাক্কা দেয় এমভি ধুলিয়া-১। চোখের পলকে ডুবে যায় ট্রলারটি।
এ সময় রাখাল ও মাঝি-মাল্লারা রশি কেটে পাঁচটি গরু উদ্ধার করতে পারলেও ২৬টি গরুসহ ট্রলারটি পানিতে তলিয়ে যায়।
ঘটনার পরপর লঞ্চের মাস্টার ফারুক হোসেনসহ এম ভি ধুলিয়া-১ কে পুলিশ আটক করে। তবে, অপর লঞ্চ এমভি আওলাদ-৭ দ্রুত ঘাট ছেড়ে পালিয়ে যায়। বিআইডব্লিউটিএর মধ্যস্থতায় রাতেই ছেড়ে দেওয়া হয় আটক হওয়া লঞ্চ ও ফারুক হোসেনকে। এ ঘটনায় কেরানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।