পদ্মায় ধসে পড়ল নড়িয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সীমানাপ্রাচীর
শরীয়তপুরে পদ্মা নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ধসে পড়েছে নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সীমানাপ্রাচীর। যেকোনো সময় পুরো হাসপাতাল বিলীন হয়ে যেতে পারে পদ্মায়। এতে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা।
আড়াই মাস ধরে নড়িয়া উপজেলার তীরবর্তী ১০টি গ্রাম পদ্মার ভাঙনের কবলে পড়েছে। গতকাল শনিবার নড়িয়ার কেদারপুর গ্রামের একটি মন্দিরসহ অন্তত ৩০টি বসতবাড়ির জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন আতঙ্কে লোকজন ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে।
নড়িয়া উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, আড়াই মাস ধরে উপজেলার পদ্মা নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলো ভাঙছে। জেলার মোক্তারেরচর, কেদারপুর ও নড়িয়া পৌরসভার ১৫টি গ্রামে ভাঙনের তীব্রতা বেশি। আড়াই মাসের ভাঙনে গ্রামগুলোর প্রায় চার হাজার পরিবার গৃহহীন হয়েছে। পদ্মার ভাঙনে মুলফৎগঞ্জ বাজার ও তার আশপাশের দেড় শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নড়িয়ার সাধুর বাজার সড়কটির প্রায় এক কিলোমিটার পাকা সড়ক ও তিনটি ব্রিজসহ অসংখ্য দালানঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গতকাল নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মূল গেটের সামনে দিয়ে বয়ে যাচ্ছিল পদ্মা। আজ সকালে হাসপাতালের সীমানাপ্রাচীরের একাংশ ধসে পড়ে নদীতে। হাসপাতাল থেকে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা কার্যক্রম।
নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা মুনীর আহম্মদ খান গতকাল বলেন, পদ্মা নদী হাসপাতালের প্রধান গেটে চলে এসেছে। ভাঙন আতঙ্কে হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। একটি ভবন নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। হাসপাতাল কোয়ার্টারের একটি কক্ষে জরুরি সেবা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি আন্তবিভাগও চালু রাখা হয়েছে।
শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম শেখ বলেন, পদ্মা নদীর ভাঙন রোধে তাৎক্ষণিক প্রতিরক্ষামূলকভাবে এক লাখ ১০ হাজার বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। এখনো বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা অব্যাহত রয়েছে। প্রায় এক হাজার ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্প নামে একটি প্রকল্পের অনুমোদন হয়েছে। চলতি বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বর নাগাদ প্রকল্পটির কাজ শুরু করা হবে।