খালেদা জিয়ার ব্যবস্থাপত্র মিলবে কাল
কারাবন্দি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য দেখেছেন তাঁর জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা। আগামীকাল রোববার তাঁর ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপশন) কারা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এর আগে আজ শনিবার বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে কারাগারে প্রবেশ করেন মেডিকেল বোর্ডের পাঁচ চিকিৎসক। প্রায় এক ঘণ্টা পর তাঁরা কারাগার থেকে বেরিয়ে যান। সাংবাদিকরা তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে পারেননি।
কারাফটকের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সহকারী সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান। ছবি : ফোকাস বাংলা
এ সময় কারাফটকের বাইরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সহকারী সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসানকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘বোর্ডের সদস্যরা উনাকে (খালেদা জিয়া) দেখেছেন, আধা ঘণ্টার মতো। উনারা আগামীকাল আমাদের কাছে রিপোর্ট পেশ করবেন। উনার শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা যা করার উনারা করেছেন। আগামীকাল বোর্ড সদস্যরা আমাদের অফিশিয়াল রিপোর্ট পেশ করবেন। উনার ওই পূর্বের যেই সমস্যাগুলো ছিল। আর্থ্রাইটিস প্লাস হিপ জয়েন্টে ব্যথা এইতো।’
খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়া হবে কিনা এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সহকারী সার্জন বলেন, ‘এ বিষয়ে বোর্ডের মতামত ছাড়া বলা যাবে না।’ এ ছাড়া খালেদা জিয়াকে কী ধরনের ওষুধ পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এ বিষয়েও সহকারী সার্জন বলেন, ‘রিপোর্ট পেশের পরই সিদ্ধান্ত হবে।’
পরে চিকিৎসক দলের সদস্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক আবদুল জলিল চৌধুরীকে তাঁর মুঠোফোনে ফোন করলে তিনি বলেন, ‘ম্যাডামের সাথে কথা বলেছি। উনাকে অবজার্ভ করেছি। তাঁর গিরার জয়েন্টগুলো দেখেছি, পা দেখেছি, চোখের একটু সমস্যা ছিল তা দেখেছি। ম্যাডামের পূর্বের রিপোর্টগুলো সব দেখেছি। তিনি কেন হাঁটতে পারছেন না, সেজন্য তাঁর পা দেখা হয়েছে। এছাড়াও চোখের একটু সমস্যা, তা চোখের ডাক্তার দেখেছেন। ম্যাডামের রুমে ঢোকার আগে তাঁর পূর্বের যতো কাগজপত্র ছিল সব আমরা দেখেছি। এছাড়াও আরো অনেক বিষয় আমরা নিজেরা এক্সামিন করেছি। ম্যাডামের কাছেও জানতে চেয়েছি তাঁর সমস্যা।’
আবদুল জলিল চৌধুরী আরো বলেন, ‘অনেক দেরি হয়ে যাওয়াতে আজ আমরা সবাই এক সাথে বসতে পারিনি। আগামীকাল সকালে মেডিকেল বোর্ডের পাঁচজন সদস্য এক সাথে বসব। আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ম্যাডামের কী কী দরকার অথবা তাঁর জন্য কী কী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। আমরা কাল প্রেসক্রিপশন লিখব। তারপরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিস্তারিত সব কিছুই বলতে পারব।’
এর আগে গত ৯ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির প্রতিনিধিদল। বৈঠকে তাঁরা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার দাবি জানান। এরপর খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠনের নির্দেশ দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এ মেডিকেল বোর্ড যা সুপারিশ করবে, সে অনুযায়ীই খালেদা জিয়ার চিকিৎসা করা হবে বলে তিনি জানান।
গঠিত পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের সদস্য হলেন বিএসএমএমইউর ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক আবদুল জলিল চৌধুরী, কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. হারিসুল হক, অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক আবু জাফর চৌধুরী, চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তারিক রেজা আলী এবং ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. বদরুন্নেসা আহমেদ।