‘বিসিএস’ মেয়েকে উদ্ধারের দাবিতে থানায় মা-বাবার অবস্থান
৩৭তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডার পাওয়া তাসলিমা সুলতানা সিনথিয়া অপহৃত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর বাবা। গত ১৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় কেন্দুয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র প্রয়াত আব্দুল হক ভূঁইয়ার ছোট ছেলে রাতুল হাসান বাবুসহ পাঁচজন সিনথিয়াকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়।
অপহৃত একমাত্র মেয়েকে দ্রুত উদ্ধারের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার কেন্দুয়া থানা প্রাঙ্গণে অবস্থান নেন সিনথিয়ার বাবা কেন্দুয়া উশু অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুলতান আহমেদ ও মা রাজিয়া সুলতানা। এই দম্পতি সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত থানা প্রাঙ্গণে মাটিতে বসে অবস্থান নেন। তাঁরা তাঁদের বুকের ধনকে দ্রুত অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য পুলিশের প্রতি জোর দাবি জানান।
এর আগে বুধবার রাতে সিনথিয়াকে অপহরণের অভিযোগ এনে রাতুল হাসান বাবুসহ পাঁচজনকে আসামি করে কেন্দুয়া থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন সিনথিয়ার মা রাজিয়া সুলতানা।
মামলার এজাহারে বলা হয়, কেন্দুয়া পৌর শহরের আরামবাগ এলাকার বাসিন্দা কেন্দুয়া উশু অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুলতান আহমেদের একমাত্র মেয়ে তাসলিমা সুলতানা সিনথিয়া। তিনি ৩৭তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে প্রশাসন ক্যাডার পেয়েছেন। গত ১৮ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাতুল হাসান বাবু অন্য আসামিদের সহযোগিতায় সিনথিয়াকে বাসা থেকে অস্ত্রের মুখে জোর করে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় অপহরণ করে নিয়ে যায়।
সিনথিয়ার বাবা সুলতান আহমেদ কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের বলেন, ‘অপহরণের দুদিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত আমার মেয়েকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।’ তিনি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
এ ব্যাপারে কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমারত হোসেন গাজীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অপহৃত সিনথিয়াকে উদ্ধারের জোর চেষ্টা চলছে।
নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শাহ্জাহান মিয়া বলেন, আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভিকটিমের অবস্থান শনাক্তের পাশাপাশি তাঁকে উদ্ধার এবং আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।
যোগাযোগ করা হলে রাতুলের আপন চাচা কেন্দুয়া পৌরসভার আওয়ামী লীগের মেয়র আসাদুল হক ভূইয়া বলেন, ঢাকায় পড়াশুনা করা অবস্থায় রাতুল ও সিনথিয়ার প্রেমের সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। গত ১১ আগস্ট তাঁরা পরিবারের কাউকে না জানিয়ে ঢাকায় কাজি অফিসে বিয়ে করেন। কিছুদিন ঢাকায় এক সঙ্গে থাকার পর যে যার মতো কেন্দুয়ায় চলে আসে। এরপর বিষয়টি উভয়ের পরিবার জানতে পারে। আমরা মেয়ের পরিবারকে প্রস্তাব দেই, আনুষ্ঠানিকভাবে অনুষ্ঠান করে মেয়েকে ঘরে তোলার জন্য। কিন্তু সিনথিয়া বিসিএস প্রশাসনে চাকরি হওয়ায় তার মা-বাবার দাম বেড়ে গেছে। তাঁরা আমাদের প্রস্তাবে রাজি হননি।’
আসাদুল আরো বলেন, সিনথিয়া স্বেচ্ছায় তাঁর স্বামী রাতুলের সঙ্গে চলে গেছে। তাকে কেউ অপহরণ করেনি।