সরকারকে লজ্জাজনক পরাজয় বরণ করতে হবে : নজরুল
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ন্যূনতম দাবির ভিত্তিতে আগামীতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে উঠতে যাচ্ছে। যে আন্দোলনের মুখে বর্তমান সরকারকে শুধু পদত্যাগ নয়, লজ্জাজনক পরাজয় বরণ করতে হবে।
আজ রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি ও সুস্বাস্থ্য কামনায় জাতীয়তাবাদী নবীন দল আয়োজিত দোয়া ও আলোচনা সভায় বিএনপি নেতা এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘১৬ কোটি মানুষকে রক্ষা করার জন্য দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা দরকার। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের নেত্রী গ্রেপ্তার হওয়ার আগেই জনগণের কাছে আহ্বান জানিয়ে গেছেন একটি নির্দলীয় সরকার, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনের লক্ষ্যে আন্দোলনের জন্য। সংসদ ভেঙে দিতে হবে, ইভিএম বাতিল এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। এসব দাবিতেই গতকাল দেশের অনেক বড় বড় রাজনীতিবিদ ও বিশিষ্ট ব্যক্তি একই দাবিতে আন্দোলনের আহ্বান জানিয়েছেন। আমাদের দল সেখানে অংশগ্রহণ করে তাদের বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেছে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আমাদের ২০ দল একটা জোট করেছে, বাম দলের একটা জোটের প্রতিনিধিরা সেখানে অংশ নিয়েছেন। এ সবার অংশগ্রহণে প্রমাণিত হয়, আগামী দিনে এসব ন্যূনতম দাবির ভিত্তিতে একটা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে উঠতে যাচ্ছে। যে আন্দোলনের মুখে এই সরকারকে শুধু পদত্যাগ নয়, পিনাক চক্রবর্তীর ভাষায় লজ্জাজনক পরাজয় বরণ করতে হবে।’
সাবেক এই শ্রমিক নেতা বলেন, ‘বিএনপি কারো শত্রু নয়, আমরা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। আমরা কেউ কারো শত্রু নই। আমরা আওয়ামী লীগকে আমাদের শত্রু মনে করি না। তারা আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। আমরা তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, অন্যান্য আচরণের বিরোধিতা করি। নির্বাচনের সময় তাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব, তাদের হারানোর চেষ্টা করব। কিন্তু তাদের সঙ্গে আমাদের আচরণ শত্রুতাপূর্ণ হওয়ার কারণ নাই। কিন্তু আজ খালেদা জিয়ার সঙ্গে সরকার যে আচরণ করছে, এ আচরণ শত্রুতামূলক, অমানবিক। সরকারে যাঁরা আছেন, তাঁরা যে শপথ করেছিলেন তার পরিপন্থী।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, মন্ত্রী হলে শপথ নিতে হয় যে অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী হয়ে আমি কোনো কিছু করব না। তারা (আওয়ামী লীগ) বশবর্তী হয়ে চিকিৎসা না দিয়ে খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। মূল মামলায় জামিন হওয়ার পরও মুক্তি দিচ্ছে না।
‘সরকার ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে গেছে। কারণটা কী? কারণ, গতকাল ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, দল ক্ষমতায় না থাকলে তোমাদের (দলের নেতাকর্মীদের) হাজার পাওয়ারের বাল্ব দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না। এটাই বাস্তবতা। আগের ইতিহাসও তাই। ১৯৭৫ সালের পরও তাদের খুঁজে পাওয়া যায় নাই। এখনো খুঁজে পাওয়া যাবে না। কারণ, দুর্নীতি, অনাচার, অপরাধ করে তারা মানসিকভাবে এতই দুর্বল যে সবকিছুতেই ভয় পাচ্ছে।’
খালেদা জিয়ার মামলার বিষয়ে নজরুল ইসলাম আরো বলেন, খালেদা জিয়া যে মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন, সেটাতে তিনি জামিন পেয়েছেন। অন্যান্য মামলায় তিনি জামিন পেয়েছেন। দুটি মামলা আটকে রাখা হয়েছে। ওই দুই মামলায় সব আসামি জামিনে আছেন; কিন্তু খালেদা জিয়াকে জামিন দেওয়া যাবে না। ভয়, যে খালেদা জিয়া বের হয়ে এলে তাঁর প্রতি জনগণের সহানুভূতি, জনপ্রিয়তা যত বেড়েছে, তার সামনে সরকার দাঁড়াতে পারবে না সেই ভয়ে।