অপহরণ নয়, প্রেম করে বিয়ে করেছেন সেই সিনথিয়া
গত কয়েক দিনের সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে জয় হলো প্রেম-পরিণয়ের। গতকাল সোমবার বিকেলে নেত্রকোনার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে গিয়ে নিজেই হাজির হন ৩৭তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ তাসলিমা সুলতানা সিনথিয়া।
সিনথিয়ার সঙ্গে নেত্রকোনার কেন্দুয়া পৌরসভার প্রথম মেয়র প্রয়াত আবদুল হক ভুইয়ার ছোট ছেলে রাতুল হাসান বাবুর রেজিস্ট্রি কাবিনমূলে বিয়ে হয় গত ১১ আগস্ট। বিয়ের এক মাস আটদিন পর সিনথিয়াকে অপহরণের অভিযোগ এনে গত ১৯ সেপ্টেম্বর কেন্দুয়া থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন সিনথিয়ার মা রাজিয়া সুলতানা। পরের দিন বৃহস্পতিবার সিনথিয়ার মা রাজিয়া ও বাবা সুলতান আহমেদ তাঁর মেয়ে সিনথিয়াকে উদ্ধারের দাবিতে থানায় অবস্থান নেন।
সেদিন সিনথিয়ার মা-বাবার দাবি ছিল, ১৮ সেপ্টেম্বর কেন্দুয়া পৌর শহরের আরামবাগ মহল্লার বাসা থেকে কিছু দুষ্কৃতিকারী সিনথিয়াকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। অপহৃতাকে উদ্ধারের দাবিতেই তাঁরা থানার প্রাঙ্গণে গিয়ে অবস্থান নেন।
রাজিয়া সুলতানার মামলার এজাহারে উল্লেখ ছিল, কেন্দুয়া পৌরসভার প্রথম মেয়র প্রয়াত আবদুল হক ভুইয়ার ছোট ছেলে ও বর্তমান পৌর মেয়র মো. আসাদুল হক ভুইয়ার ভাতিজা রাতুল হাসান বাবু, অপর ভাতিজা সাফিম, ভাগ্নে জুনায়েদ, পুলক ও কাউরাট গ্রামের মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে অজ্ঞাতনামা আরো ১৫-২০ জন তাঁর মেয়ে সিনথিয়াকে অস্ত্র দেখিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যান।
সিনথিয়া কেন্দুয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কাউন্সিলর আশরাফ উদ্দিন ভুইয়ার ভাগ্নি। মামলা দায়েরের পর এ ঘটনাটি নিয়ে জনমনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়ের প্রেম করে বিয়ের পর অপহরণ নাটক সাজিয়ে মামলা দিয়ে উদ্ধারের জন্য থানায় অবস্থান নেওয়ার ঘটনায় জনমনে তীব্র আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি করে। এরপর কদিন ধরেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশে আলোচনার মাত্রা আরো অনেকগুণ বেড়ে যায়।
আদালতে সিনথিয়া বলেছেন, রাতুল হাসান বাবুর সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তিনি নিজের ইচ্ছাতেই গত ১১ আগস্ট রেজিস্ট্রি কাবিনমূলে রাতুলকে বিয়ে করেন। কেউ তাঁকে অপহরণ করেনি।
আদালতের বিচারক তাঁর বক্তব্য গ্রহণের পর নিজের জিম্মাতেই তাঁকে দিয়েছেন। কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমারত হোসেন গাজী এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মামলার সূত্র ধরেই তাসলিমা সুলতানা সিনথিয়া আদালতে তাঁর বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। আদালতের বক্তব্যের কপি এখনো আমরা হাতে পাইনি। তবে আদালত তাঁকে তাঁর নিজের জিম্মায় নিজ বাড়িতে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
এদিকে সিনথিয়ার মামা কেন্দুয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কাউন্সিলর আশরাফ উদ্দিন ভুইয়ার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘সিনথিয়া আদালতে গিয়েছিল। তবে আদালতে কী বক্তব্য দিয়েছে তা এখনো জানতে পারিনি।’