স্কুল আছে, রাস্তা নাই!
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার পাঙ্গাসী ইউনিয়নের বেংনাই উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অবকাঠামো সব রয়েছে—শুধু নেই স্কুলঘরে পৌঁছানোর জন্য একটি ভালো রাস্তা। শিক্ষার্থীরা পানিতে ভিজে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করছে। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে প্রতিদিন। যার প্রভাবে ওই স্কুলে দিন দিন কমে যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও। স্কুলের যাত্রাপথে একটি কালভার্ট থাকলেও উভয় পাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় সেটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। ফলে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নিত্যদিন।
সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, চারপাশে ধানক্ষেতে ঘেরা বেংনাই উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য খালের ওপর একটি কালভার্ট রয়েছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে নির্মাণের পর তিন বছর গড়ালেও কালভার্টটির দুপাশে মাটি ভরাটের কাজটি আলোর মুখ দেখেনি। স্থানীয় একজন এই প্রতিবেদককে বলছিলেন, বর্ষা মৌসুম দেখে যে কারো মনে হবে যেন পানির ওপর নৌকার মতো ভাসছে ছোট্ট সেতুটি।
বিদ্যালয়টিতে সর্বমোট ১৮৫ শিক্ষার্থী রয়েছে। এদের উপস্থিতি দিন দিন কমে যাচ্ছে। স্কুলের শিক্ষার্থী তোফায়েল আহমেদ, ইলিয়াস ও হেনা খাতুনরা বলছে, কাপড়চোপড় ভিজে বই বাঁচিয়ে খাল পার হয়ে স্কুলে যেতে হয় তাদের। আবার যখন পানিতে খাল ভরে যায়, তখন অনেক পথ ঘুরে যেতে হয়। একইভাবে আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী তাদের দুর্ভোগের কথা বলতে লাগল।
বাঁশের সাঁকো পার হয়ে ধানক্ষেতে আইল ধরে স্কুলঘরে পৌঁছাতে হয় শিশুদের। ছবি : এনটিভি
বেংনাই উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মোছা. উম্মে জান্নাত বলেন, কালভার্টটির সংযোগ সড়ক না থাকায় শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ শিক্ষকদের যাতায়াতে খুবই কষ্ট হচ্ছে।
বেংনাই উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আবদুর রহিম মাস্টার বলেন, আঞ্চলিক পাকা সড়ক থেকে বিদ্যালয় মাত্র ১০০ গজ দূরে অবস্থিত হলেও শিক্ষার্থীদের একটি খাল পার হয়ে ক্লাস কক্ষে যেতে হয়। বৃষ্টির মৌসুমে ওই খাল পানিতে ভরে গেলে দুই থেকে তিন কিলোমিটার ঘুরে স্কুলে যেতে হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। আর এ কষ্ট লাঘবের জন্য সরকারি অর্থায়নে কয়েক লাখ টাকা ব্যয়ে কয়েক বছর আগে কালভার্টটি নির্মাণ করা হলেও কোনো কাজেই আসছে না।
স্থানীয় পাঙ্গাসী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুস সালাম বলেন, কালভার্টটি নির্মাণের সময় মাটি ফেলে রাস্তা করতে শ্রমিকের জন্য মজুরির বরাদ্দ থাকলেও বাইরে থেকে মাটি ক্রয় করার জন্য অর্থ বরাদ্দ ছিল না। এ জন্যই কালভার্টটি এ অবস্থায় পড়ে আছে।
রায়গঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আকতারুজ্জামান বলেন, ‘রাস্তার বিষয়টি আমাদের না।’ সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে বলা হয়েছে, তারা সংযোগ রাস্তাটি দ্রুত ভরাট করবে বলে জানান তিনি।