খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আদেশ ১ নভেম্বর
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত আনার দুই মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা-সংক্রান্ত আদেশের জন্য ১ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নূর এ দিন ধার্য করেন।
মামলার বাদী বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী এনটিভি অনলাইনকে জানান, আজ আদালতে মানহানির দুই মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু বিচারক নথি পর্যালোচনা করে আদেশ পরে দেবেন বলে নতুন তারিখ ঠিক করেছেন।
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তির মামলা
২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী মামলাটি করেছিলেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের স্বাধীনতা চান নাই। তিনি চেয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রিত্ব। জেনারেল জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ায় এ দেশের জনগণ যুদ্ধে নেমে ছিল।’
বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, ‘বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে উন্নয়নের নামে চলছে দুর্নীতি ও লুটপাট। দলীয় লোকদের জঙ্গি বানিয়ে নিরীহ লোকজনকে হত্যা করছে, ধর্মলঘুদের বাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করে লুটপাট ও হত্যা করছে। পুলিশ বাহিনী দিয়ে বিরোধী দলসহ ভালো ভালো লোককে গ্রেপ্তার করে গুম ও হত্যা করছে।’
বিএনপির চেয়ারপারসন আরো বলেন, ‘উন্নয়নের নামে পদ্মা সেতু ও ফ্লাইওভারের কাজ বিলম্ব করে ব্যয়বহুল অর্থ দেখিয়ে লুটপাট করছে। যার বিরুদ্ধে আমি ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের হুকুম দিচ্ছি, তোমরা প্রতিটি গ্রামেগঞ্জে নেমে এই সরকারের বিরুদ্ধে সব জনগণ ও যুবসমাজকে ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের পক্ষে ঝাঁপিয়ে নামার ব্যবস্থা করো।’
খালেদা জিয়ার এসব বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের মানহানি হয়েছে দাবি করে মামলাটি করেন এ বি সিদ্দিকী।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মামলা
২০১৪ সালের ২১ অক্টোবর জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী ঢাকা মহানগর হাকিম মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে নালিশি মামলাটি করেন।
পরে বিচারক মামলাটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে শাহবাগ থানার একজন পরিদর্শক পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলার আরজি থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে হিন্দু সম্প্রদায়ের শুভ বিজয়ার অনুষ্ঠানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন খালেদা জিয়া। এ সময় তিনি আওয়ামী লীগের প্রতি কটূক্তি করেন।
বক্তৃতার একপর্যায়ে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ধর্মনিরপেক্ষতার মুখোশ পরে আছে। আসলে দলটি ধর্মহীনতায় বিশ্বাসী।’
বিএনপির চেয়ারপারসন আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সব ধরনের মানুষের ওপর আঘাত করে। আর লোক দেখানো ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দখল করে নেয়। ধর্মনিরপেক্ষতার মুখোশ পরা এই জবরদখলকারী সরকারের হাতে কোনো ধর্মের মানুষই নিরাপদ নয়।’
এর আগে গত ৩০ জুন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুই মামলায় তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন শাহবাগ থানার ওসি (তদন্ত) জাফর আলী বিশ্বাস।
এরপর মামলার বাদী এ বি সিদ্দিকী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন। আদালত নথি পর্যালোচনা করে আদেশ দেওয়ার জন্য আজ দিন ধার্য করেন।