মাইক্রোবাসে তুলে আ. লীগ নেতাকে অপহরণ!
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালাম (৪৮) দুইদিন থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। পরিবারের অভিযোগ, গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার পলাশী থেকে কালো রঙের একটি মাইক্রোবাসে করে সালামকে অপহরণ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় রোববার রাতে সালামের স্ত্রী আফরোজা বেগম বাগমারা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। সালামের সন্ধান চেয়ে আজ সোমবার দুপুরে উপজেলার চেউখালীতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। তারা নিখোঁজ আবদুস সালামের ছবি হাতে নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেয়। এ সময় তারা সালামকে উদ্ধারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি দাবি জানায়।
আবদুস সালামের বাড়ি বাগমারার গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের চেউখালী গ্রামে। তিনি আলু ও পোলট্রি ব্যবসার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাদ দিয়ে আবদুস সালামের ভাই সায়েম আলী জানান, রোববার সকালে ব্যবসায়িক কাজে তাঁর ভাই উপজেলা সদরের ভবানীগঞ্জ বাজারে গিয়েছিলেন। বেলা ১১টার দিকে বাজারের একটি চায়ের স্টলে কয়েকজন মিলে তিনি চা পান করে। এরপর দুপুরের দিকে নিজের মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। পথে পলাশী গ্রাম নামক স্থানে একই দিক থেকে আসা একটি কালো রঙের মাইক্রোবাস তাঁর ভাইয়ের মোটরসাইকেলের সামনে দাঁড়ায়। মাইক্রোবাসে থাকা লোকজন তাঁর ভাইকে জোর করে মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। এ সময় গাড়ি থেকে নেমে অন্য দুজন তাঁর ভাইয়ের মোটরসাইকেল নিয়ে চলে যায়। দুপুরের পর থেকে সালামকে আর পাওয়া যায়নি। এমনকি তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে। আত্মীয়স্বজন, থানাসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজিও করে তাঁকে পাওয়া যাচ্ছে না।
দলীয় সূত্র জানায়, গত ইউপি নির্বাচনে আবদুস সালাম গোয়ালকান্দি ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে প্রথমে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান। পরে তাঁর বিরুদ্ধে জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সঙ্গে সম্পৃক্ততা অভিযোগ ওঠে। পরে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ তাঁর মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেয়। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে তিনি বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেন। নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী আলমগীর হোসেনের কাছে পরাজিত হন তিনি।
২০০৪ সালে জেএমবি নেতা বাংলা ভাই এলাকায় সর্বহারা দমনের নামে অভিযান চালালে আবদুস সালাম তার সঙ্গে যোগ দিয়ে অভিযানে অংশগ্রহণ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহমেদ জানান, আবদুস সালাম নিখোঁজের ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়েছে।
সালামের বিরুদ্ধে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ সম্পর্ক জানতে চাইলে ওসি বলেন, এক সময় তালিকায় তাঁর নাম ছিল বলে শুনেছি। তবে এখন নেই। এখন তিনি আওয়ামী লীগের উঁচুমানের নেতা। তাঁকে কে তুলে নিয়ে গেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ বিষয়ে আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি।