হালদা নদীতে রাতে অভিযান, ১৪০০ মিটার জাল আটক
প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র চট্টগ্রামের হালদা নদীতে গভীর রাতে অভিযানের পর বিপুল পরিমাণ ঘেরা জাল উদ্ধার করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় ঘেরা জালে আটকা পড়া রুই জাতীয় মা মাছ নদীতে অবমুক্ত করা হয়। পরে জালটি আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
রাত সাড়ে ৩টা পর্যন্ত হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুহুল আমিন এ অভিযান পরিচালনা করেন। এর আগে হালদা নদীতে কয়েক দফা অভিযান চালিয়ে প্রায় ১ হাজার ৪০০ মিটার জাল উদ্ধার করেন ইউএনও রুহুল আমিন।
অভিযানের পর ইউএনও রুহুল আমিন জানান, রাত সাড়ে ৩টা পর্যন্ত উপজেলার গড়দুয়ারা এলাকায় হালদা নদীতে অভিযান চালানো হয়। মূলত এ অঞ্চলে রুই জাতীয় মাছ থেকে ডিম সংগ্রহ করা হয়। অসময়ে সেসব স্থানে ঘেরা জাল দিয়ে ডিম ছাড়তে আসা রুই জাতীয় মাছ ধরা হচ্ছিল। অভিযানের সময় জাল আটক করে দেখা যায়, আটকে পড়া অধিকাংশ মাছের ওজন এক কেজির বেশি। পরে আটকে পড়া রুই, কাতলা ও কার্পসহ ১৫টি মাছ আবারো হালদা নদীতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ইউএনও জানান, আগে দিনে রাতে হালদা নদীতে জাল দিয়ে মাছ ধরা হতো। অভিযান শুরু হওয়ার পর রাতে ঘেরা জাল দিয়ে মাছ শিকার বেড়েছে।
চট্টগ্রামের হালদা নদীতে অভিযানে আটক করা ঘেরা জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। ছবি : এনটিভি
রুহুল আমিন জানান, তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা রক্ষায় বালু উত্তোলন বন্ধ, ঘেরা জাল জব্দ করাসহ অন্যান্য অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে ১ হাজার ৪০০ মিটার ঘেরা জাল উদ্ধার করে ধ্বংস করা হয়েছে। একজনকে দুই মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
হাটহাজারী উপজেলা ত্রাণ কর্মকর্তা নিয়াজ মোর্শেদ জানান, ইউএনও রুহুল আমিন হাটহাজারীতে যোগ দেওয়ার পর থেকে গত ২৫ দিনে হালদা নদীতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় বালু উত্তোলন বন্ধ, ড্রেজার মেশিন জব্দ, মশারি জাতীয় ঘেরা জাল উদ্ধারসহ জালগুলো আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করে দেওয়া হয়।
হালদা রক্ষা কমিটির সদস্য নোমান খান বলেন, রাতে প্রশাসনের এ অভিযান পরিচালনা করা অত্যন্ত সাহসী পদক্ষেপ। হালদা নদী জোয়ার ভাটার নদী। প্রতিনিয়ত এ নদীতে মাছ আসছে। এক শ্রেণির অসাধু জেলেরা কারেন্ট জালের পাশাপাশি রাতের অন্ধকারে রোটানল ঔষধ ব্যবহার করে বড় মাছ শিকার করছে। এছাড়া মদুনাঘাট থেকে গড়দুয়ারা পর্যন্ত কারেন্ট জালের ব্যবহারও বেড়েছে। অভিযান চলমান থাকলে হালদা নদী রক্ষা পাবে। ডিম সংগ্রহের মৌসুমে প্রকৃত সুফল পাবে দেশবাসী।