‘সড়ক নিরাপত্তা আইন সংশোধনের সুযোগ নেই’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘সড়ক নিরাপত্তা আইন সংশোধনের আপাতত কোনো সুযোগ নেই।’
আজ মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রিসভা, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন, পরিবহন শ্রমিকদের আন্দোলনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন সেতুমন্ত্রী।
পরিবহন শ্রমিকদের চলমান আন্দোলন থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই আইনটি পাস করার আগে তিন বছর ধরে পরিবহন মালিক, শ্রমিক, বিশেষজ্ঞ ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করা হয়েছে। হুট করেই এ আইনটি করা হয়নি। কাজেই বর্তমানে এ আইন সংশোধনের সময় ও সুযোগ কোনোটাই নেই।’
পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সরকার সম্প্রতি সড়ক নিরাপত্তা আইন নামে একটি আইন পাস করে। এ আইনে গাড়ির চালক, শ্রমিক ও মালিকদের বিভিন্ন অনিয়মের জন্য বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও জরিমানার কথা বলা হয়েছে। আইনটি পাস হওয়ার পর থেকে পরিবহন শ্রমিকরা আন্দোলন করে আসছে। তারা আইনটি সংশোধন করে সাজার মেয়াদ কমানোর দাবি জানায়। পরিবহন শ্রমিকদের আন্দোলনের যাত্রীদের দুর্ভোগ হচ্ছে। এ অবস্থায় সরকার তাদের দাবি মেনে নেবে কি না? জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পরিবহন শ্রমিক, মালিক ও যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই সরকার এ আইনটি করেছে।’
আগামী নির্বাচনের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচন হবে, এটা শতভাগ নিশ্চিত। সেই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে। বিএনপি নেতারাই বলেছেন, নির্বাচনের এবং আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা। বিএনপিকে আমরা দুর্বল মনে করছি না। বিএনপি শক্ত প্রতিপক্ষ।’
সংসদ বহাল থাকা অবস্থায় মন্ত্রী-এমপিরা নির্বাচনী প্রচারণায় সরকারি নিরাপত্তা ও অতিরিক্ত সুবিধা পাবে, অন্যদিকে গায়েবি মামলার শিকার হচ্ছেন বিএনপি নেতারা। এতে নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হবে কি না প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচনের সময় সবাই নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলবে। প্রচারণায় সরকারি দল যে সুযোগ-সুবিধা পাবে, বিরোধীদলও সেই সুযোগ-সুবিধা পাবে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের কোনো ব্যত্যয় হবে না। মন্ত্রীরা নিরাপত্তাজনিত কিছু বাড়তি সুবিধা পাবেন। তবে নির্বাচনী এলাকায় সার্কিট হাউস ব্যবহার করতে পারবেন না।’
নির্বাচন কমিশনে কমিশনারদের মতবিরোধ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এটা বিউটি অব ডেমোক্রেসি। পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশনে মতবিরোধ থাকতেই পারে। এটা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ নয় যে এক সদস্য ভেটো দিলে সিদ্ধান্ত কার্যকর হয় না।’
নির্বাচন নিয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সংশয়মূলক বক্তব্যের ব্যাপারে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এরশাদের এই বক্তব্য তাঁর নিজস্ব। তিনি অসুস্থ অবস্থায় সিএমএইচে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।’
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘একজন একটি মামলা করেছে, মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁর গ্রেপ্তারের সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের কোনো যোগসূত্র নেই।’