খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড, বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের বিক্ষোভ
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়ার প্রতিবাদে নিম্ন আদালতে বিএনপপন্থী আইনজীবীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
আজ সোমবার পুরান ঢাকার জজকোর্ট, মুখ্য মহানগর হাকিমের (সিএমএম) আদালত ও মহানগর দায়রা জজ আদালতে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা এ বিক্ষোভ করেন।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী হান্নান ভূঁইয়া এনটিভি অনলাইনকে জানান, খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া ও মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আজ আদালতে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।
এদিকে আজ দুপুর ১২টায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের অস্থায়ী আদালতের বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামান। এ ছাড়া মামলার অপর তিন আসামিকেও একই দণ্ড দিয়েছেন আদালত।
এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর কারাদণ্ডাদেশ দেন বিচারিক আদালত। রায় ঘোষণার পর পরই খালেদা জিয়াকে ওই দিন বিকেলে (৮ ফেব্রুয়ারি) নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী অসুস্থ থাকায় আজ রায়ের সময় আদালতে হাজির ছিলেন না। এমনকি এই মামলার পরিচালনার দায়িত্বে থাকা তাঁর কোনো আইনজীবীও যাননি রায় শুনতে। তবে দুর্নীতি দমন কমিশন ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা এ দিন আদালতে হাজির ছিলেন।
এই মামলার অন্য তিন আসামি হলেন, খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌনিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। এঁদের মধ্যে হারিছ চৌধুরী পলাতক রয়েছেন। বাকি দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত আজ এই তিনজনকেও অভিন্ন সাজা দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার পলাতক আসামি হারিছ চৌধুরীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি আদালতে উপস্থিত দুই আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
একই সঙ্গে রায়ে যে ৪২ কাঠা জমির কেনা নিয়ে মামলার সূচনা, সেই জমিটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০০৫ সালে কাকরাইলে সুরাইয়া খানমের কাছ থেকে ‘শহীদ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’-এর নামে ৪২ কাঠা জমি কেনা হয়। কিন্তু জমির দামের চেয়ে অতিরিক্ত এক কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জমির মালিককে দেওয়া হয়েছে বলে কাগজপত্রে দেখানো হয়, যার কোনো বৈধ উৎস ট্রাস্ট দেখাতে পারেনি।
জমির মালিককে দেওয়া ওই অর্থ ছাড়াও ট্রাস্টের নামে মোট তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা অবৈধ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের নামে তেজগাঁও থানায় দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা করেছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুন-অর রশিদ।