পরিবহন ধর্মঘটে নবজাতকের মৃত্যু, শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন
পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘটে আটকা পড়া অ্যাম্বুলেন্সে সাত দিনের নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে মৌলভীবাজারবাসী। দোষীদের শাস্তির দাবি ও ঘটনার প্রতিবাদে আজ বুধবার মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে মানববন্ধন করে ইয়ুথ স্যোশাল অরগানাইজেশন।
ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তব্য দেন মো. মুহিবুর রহমান, ওয়াসিম আহমদ নিসান, নিহত নবজাতকের চাচা হাজি আকবর আলীসহ অন্যরা। এ সময় তাঁরা পরিবহন শ্রমিক নেতাদের হুকুমের আসামি করে মামলা ও গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
গত ২৮ ও ২৯ অক্টোবর সারা দেশে কঠোর ধর্মঘট পালন করেন পরিবহন শ্রমিকেরা। ধর্মঘট চলার সময় বিভিন্ন জায়গায় চালকদের মুখে ও গাড়িতে পোড়া মবিল লাগিয়ে দেয় শ্রমিকরা। রেহায় পায়নি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাদের শরীরেও পোড়া মবিল মাখিয়ে দেন শ্রমিকরা। যানবাহনের চাবি কেড়ে নিয়ে নষ্ট করে ফেলেন। আটকে রাখেন সব সময় হরতাল-ধর্মঘটের আওতামুক্ত থাকা অ্যাম্বুলেন্সের গাড়িও।
ধর্মঘটের প্রথমদিনে মৌলভীবাজারের বড়লেখা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে সাতদিনের অসুস্থ নবজাতককে নিয়ে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হন তার মা সায়রা ও অন্যরা। পথে দুইবার তাদের অ্যাম্বুলেন্সটি আটকে দেয় পরিবহন শ্রমিকরা।
এ ব্যাপারে শিশুটির চাচা আকবর আলী ফুল মিয়া জানান, সেদিন সকাল সাড়ে ১০টায় তাঁরা অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশে যাত্রা করেন। পথে প্রথমে বড়লেখা উপজেলার দাশের বাজার এলাকায় তাঁদের অ্যাম্বুলেন্স প্রায় আধাঘণ্টা আটকে রাখে অবরোধকারী শ্রমিকরা। সেখান থেকে অনেক অনুরোধ করে ছাড়া পেতে হয়। সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার চান্দ্রগ্রাম এলাকায় আবারও বাধা দেয় পরিবহন শ্রমিকরা। সেখানে অবরোধকারী পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার দেড়ঘণ্টা পর শিশুটির অবস্থা খারাপ হলে তারা গাড়িটি ছেড়ে দেয়। এ সময় সায়রা ও আকবর দেখেন শিশুটির নড়াচড়া বন্ধ হয়ে গেছে। বেলা ২টার দিকে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিনুল হক বলেছিলেন, ‘ঘটনাটা শুনেছি। তবে কেউ এ ব্যাপারে এখনো কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’