ফরিদপুরে প্রেমের দ্বন্দ্বে কলেজছাত্রকে খুন
ফরিদপুরে প্রেমের সম্পর্ককে কেন্দ্র করে কাজী মুনসিরাতুল রহমান ওরফে আলিফ (১৮) নামের এক কলেজছাত্র খুন হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছে আবির ও সাধন নামের আরো দুজন।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ক্যাম্পাসে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হন আলিফ। পরে ঢাকায় নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। আলিফ ফরিদপুর সরকারি ইয়াছিন কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগে পড়ত।
হামলায় আহত হয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আলিফের সহপাঠী সাধন কীর্তনিয়া জানান, আলিফের সঙ্গে সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এর আগে রাজেন্দ্র কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ছাত্র আবিরের সঙ্গে ওই ছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ নিয়ে ফেসবুকের একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে আলিফ ও আবিরের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় এ দ্বন্দ্বের মীমাংসা করার কথা বলে আলিফকে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের শহর ক্যাম্পাসে ডেকে পাঠান আবির। পরে আলিফ ও সাধন রিকশায় করে রাজেন্দ্র কলেজ এলাকায় গেলে আবির ও তাঁর সহযোগীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আলিফকে এলোপাতাড়ি কোপায়। সাধন বাধা দিতে গেলে তাঁকেও কোপানো হয়। এ সময় নিজেদেরই কোনো একজনের অস্ত্রের আঘাতে আবিরও আহত হন।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আবির। ছবি : এনটিভি
অন্যদিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আবির দাবি করেন, ‘আমাকে একজন ফোন দিয়ে রাজেন্দ্র কলেজে ডেকে নিয়ে যায়। ফেসবুকে একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে সেখানে থাকা আলিফসহ ২০ থেকে ২২ জন ছেলে আমার ওপর হামলা চালায়। পরে তাদের নিজেদেরই একজনের কোপে আলিফ মারা যায়।’
হামলার পর স্থানীয়দের সহযোগিতায় আলিফকে প্রথমে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় পাঠানো হয়। অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর আলিফ মারা যান।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম জানান, এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে আবির ও সাধনকে পুলিশি নজরদারিতে রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে নিহত আলিফের পরিবার এলে একটি হত্যা মামলা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।